Dhaka ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরের কাশিমপুরে বাবাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ২ ছেলে গ্রেফতার

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
  • 29

মোঃ বাবুল শেখ, স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুর মহানগর কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ উত্তর পাড়ায় ছেলের লাঠির আঘাতে পিতার মৃত্যুর অভিযোগে পাষণ্ড দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে কাশিমপুর থানা পুলিশ। নিহত ওসমান গনি বেপারী গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের ০৪ নং ওয়ার্ডের সারদাগঞ্জ এলাকার মৃত নেফাজ উদ্দিন এর ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,ছোট ছেলে শরিফুল ইসলাম একজন নেশাগ্রস্থ। তার এই নেশার টাকার জন্য দীর্ঘ দিন যাবৎ ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে আসছে। এবিষয়ে মেজো ছেলে শফিকুল ইসলাম একাধিকবার তার ছোট ভাইকে শাসন করতে গেলে বড় ভাই মাহাবুব ইসলাম প্রতিবারই মেজো ভাইকে শাসন করতে বাধা প্রদান করতেন।
গত ১৭ই জুন রাতে কাশিমপুরের সারদগঞ্জ রাইসমিল হাবিব মার্কেট এলাকায় নেশাগ্রস্থ ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম এর উৎপাত বিষয়ে কথা বলতে গেলে বড় ভাই মাহবুব হোসেন সহ দুই ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুলের উপর এলোপাতাড়ি মারধোর শুরু করে। তাদের তিন ভাই এর ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হলে বাবা ওসমান গনি বেপারী তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এসময় ব্ড় ভাই মাহবুবের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বাবা ওসমান গনি বেপারীর মাথায় স্বজোড়ে আঘাত করে। তাদের ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ওসমান গনি বেপারীকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মেজো ছেলে শফিকুলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহাম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাবা ওসমান গনি ও তার মেঝো ছেলে শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হয়ে পরের দিন ১৮ জুন বাড়িতে ফিরে আসে।
এমতাবস্থায় ২০ জুন মঙ্গলবার মাঝ-রাতে হঠাৎ ওসমান গনি বেপারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মেজো ছেলে শফিকুল ইসলাম জানান, আমার ছোট ভাই নেশার টাকা জোগাড় করতে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে। তাকে একাধিক বার শাসন করতে চাইলে আমার বড় ভাই মাহবুব আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার ছোট ভাই ও বড়ভাই আমাকে মারধোর শুরু করে। এসময় আমার বৃদ্ধ পিতা তাদেরকে থামাতে আসলে আমার বড় ভাই মাহবুব এর হাতে লাঠি দিয়ে আমার পিতার মাথায় আঘাত করে।এতে আমার পিতা গুরুতর আহত হয়। মারপিটের বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে আমি ও আমার বাবা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়ায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে হঠাৎ করে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আমরা ছোটা ছুটি করি। একপর্যায়ে আমার বাবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
পরে কাশিমপুর থানা পুলিশ এবিষয়ে খবর পেয়ে আমার দুই ভাই শরিফুল ও মাহাবুবকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আমি নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। বাবার লাশ দাফনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলে, পুলিশ মামলার প্রয়োজনে লাশটি মর্গে পাঠায়।

কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)সৈয়দ রাফিউল করিম রাফি আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত ওসমান গনি ব্যাপারীর দুই ছেলেকে হত্যা মামলায় আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

গাজীপুরের কাশিমপুরে বাবাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ২ ছেলে গ্রেফতার

Update Time : ১২:৫৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

মোঃ বাবুল শেখ, স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুর মহানগর কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ উত্তর পাড়ায় ছেলের লাঠির আঘাতে পিতার মৃত্যুর অভিযোগে পাষণ্ড দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে কাশিমপুর থানা পুলিশ। নিহত ওসমান গনি বেপারী গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের ০৪ নং ওয়ার্ডের সারদাগঞ্জ এলাকার মৃত নেফাজ উদ্দিন এর ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,ছোট ছেলে শরিফুল ইসলাম একজন নেশাগ্রস্থ। তার এই নেশার টাকার জন্য দীর্ঘ দিন যাবৎ ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে আসছে। এবিষয়ে মেজো ছেলে শফিকুল ইসলাম একাধিকবার তার ছোট ভাইকে শাসন করতে গেলে বড় ভাই মাহাবুব ইসলাম প্রতিবারই মেজো ভাইকে শাসন করতে বাধা প্রদান করতেন।
গত ১৭ই জুন রাতে কাশিমপুরের সারদগঞ্জ রাইসমিল হাবিব মার্কেট এলাকায় নেশাগ্রস্থ ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম এর উৎপাত বিষয়ে কথা বলতে গেলে বড় ভাই মাহবুব হোসেন সহ দুই ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুলের উপর এলোপাতাড়ি মারধোর শুরু করে। তাদের তিন ভাই এর ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হলে বাবা ওসমান গনি বেপারী তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এসময় ব্ড় ভাই মাহবুবের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বাবা ওসমান গনি বেপারীর মাথায় স্বজোড়ে আঘাত করে। তাদের ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ওসমান গনি বেপারীকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মেজো ছেলে শফিকুলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহাম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাবা ওসমান গনি ও তার মেঝো ছেলে শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হয়ে পরের দিন ১৮ জুন বাড়িতে ফিরে আসে।
এমতাবস্থায় ২০ জুন মঙ্গলবার মাঝ-রাতে হঠাৎ ওসমান গনি বেপারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মেজো ছেলে শফিকুল ইসলাম জানান, আমার ছোট ভাই নেশার টাকা জোগাড় করতে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে। তাকে একাধিক বার শাসন করতে চাইলে আমার বড় ভাই মাহবুব আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার ছোট ভাই ও বড়ভাই আমাকে মারধোর শুরু করে। এসময় আমার বৃদ্ধ পিতা তাদেরকে থামাতে আসলে আমার বড় ভাই মাহবুব এর হাতে লাঠি দিয়ে আমার পিতার মাথায় আঘাত করে।এতে আমার পিতা গুরুতর আহত হয়। মারপিটের বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে আমি ও আমার বাবা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়ায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে হঠাৎ করে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আমরা ছোটা ছুটি করি। একপর্যায়ে আমার বাবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
পরে কাশিমপুর থানা পুলিশ এবিষয়ে খবর পেয়ে আমার দুই ভাই শরিফুল ও মাহাবুবকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আমি নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। বাবার লাশ দাফনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলে, পুলিশ মামলার প্রয়োজনে লাশটি মর্গে পাঠায়।

কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)সৈয়দ রাফিউল করিম রাফি আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত ওসমান গনি ব্যাপারীর দুই ছেলেকে হত্যা মামলায় আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে।