Dhaka ০৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অ্যাকশনে ভরপুর ‘মুম্বই সাগা’ কি দর্শকদের মন ছুঁতে পারল?

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৪৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ মার্চ ২০২১
  • 163552

সঞ্জয় গুপ্তা অ্যাকশন ছবির পরিচালক হিসেবে বেশ নামী এবং দামিও। যাঁর ক্রেডিটে ‘কাঁটে’, ‘শুটআউট অ্যাট ওয়াডালা’, ‘শুটআউট অ্যাট লোখন্ডওয়ালার’র মতো বক্সঅফিসে সফল ছবি, তাঁর কাছ থেকে “মুম্বই সাগা” নামের ছবি মানেই অ্যাকশনে ভরপুর ছবি, দর্শক এমনটাই আশা করেন। না, তিনি তাঁর প্রিয় দর্শকদের নিরাশ করবেন না। শুধু পেদিয়ে বৃন্দাবনই নয়, প্রায় স্বর্গ উইথ অপ্সরী দেখিয়ে ছেড়েছেন।
জন আব্রাহাম তাঁর পেয়ারের অ্যাকশন অভিনেতা। এই ছবিতে দাদার এলাকার মস্তান অমর্ত্য হয়ে তিনি কী করতে আর বাকি রেখেছেন! বোধহয় বিমান চালানোটা শুধু দেখাননি। মারপিট করার সবরকম কায়দাই করিয়েছেন।

ছবির সময়কাল আশির দশক। অর্থাৎ বাল ঠাকরের উত্থান ও পল্লবিত হয়ে ওঠার সুসময়। যখন সাম্প্রদায়িক মারাঠি প্রেমে টইটম্বুর বম্বে শহর। যখন থেকে শুরু হল বম্বে কে মুম্বই বলা! সত্যি ঘটনার অনুপ্রেরণায় লেখা চিত্রনাট্য। বুঝতে অসুবিধে হবে না, গাইতন্দে, ভাউ, সদা আনা, পুলিশের জাঁদরেল অ্যাকশন মাস্টার বিজয়ের নামের আড়ালে কে বা কারা রয়েছেন! সঞ্জয় গুপ্তা অতিসাধারণ ও গরিব তরুণ অমর্ত্যকে ধীরে ধীরে আন্ডারওয়ার্ল্ডে নিয়ে আসার কাজটি সাজিয়েছেন ভালই। পেশল চেহারার জনের মধ্যে একজন ‘হিম্যান’কে ঢুকিয়ে দেওয়া খুব একটা কঠিন কাজ ছিল না।
সঞ্জয়ের কেরামতি পরিবেশ তৈরিতে। তিনি মুম্বইয়ের তলপেটের চেহারাটি যেমন তুলে এনেছেন, তেমনই পুলিশ মহলের সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডে মস্তানদের ঘনিষ্ট আঁতাঁতটিও খুব ধীরে ধীরে স্পষ্ট করেছেন। শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার হয় পুলিশের উপরতলার সঙ্গে মস্তান জগৎ – দু’জায়গাতেই ভাউ এবং গাইতন্দের মতো মানুষরাই সবটা নিয়ন্ত্রণ করত। এবং এখনও করে বৈকি! মারাঠি প্রেমের বুলি আওড়াতে গিয়ে ভাউ মহেশ মঞ্জরেকরের গলায় শোনা গেল দু’টো লাগসই সংলাপ – “যো মারাঠিকো টোকেগা, মারাঠি উসকো ঠোকেগা” বা বামপন্থীদের স্লোগান “যখন হারানোর কিছু থাকে না, তখন পাওয়ার জন্য থাকে পুরো পৃথিবী।” কিন্তু সংলাপগুলোর ব্যবহার খুবই চমকপ্রদ।
এই ধরনের ছবির গল্প নিয়ে বলার কিসসু থাকে না, নেইও। শুধু নাটক আর চমক, লন্ডন যাওয়া-আসা টালিগঞ্জ-শ্যামবাজারের মতো। অ্যাকশন দেখানোর জন্য গাড়ি ভাঙচুর, মানুষ পেটানো বা ট্র্যাফিক আইনকে কলা দেখানো তো জলভাত। ওসব নিয়ে প্রশ্ন না তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে শেষ পর্বে দুর্জনের মৃত্যু দেখানো হলেও আবার এক নতুন অমর্ত্যর অঙ্কুরোদ্গম দেখানোয় বোঝা গেল, বম্বে মুম্বই হয়েও এখনও বম্বেতেই রয়েছে। অভিনয় নিয়ে আর কী বলা যায়! জন আব্রাহাম তাঁর শরীরী আবেদনকে যথাসাধ্য ব্যবহার করে অমর্ত্যকে “প্রাণ” দিয়েছেন। মহেশ মঞ্জরেকরের “ভাউ” এবং আমোলে গুপ্তের “গাইতোন্ডে” সত্যিই বাড়তি পাওনা। ইমরান হাশমির বিজয় ইন্সপেক্টর শুধু গর্জন করেই গেলেন, অভিনয়ের সুযোগ আর পেলেন কোথায়! একই কথা প্রতীক বব্বর প্রসঙ্গেও। কাজল আগরওয়াল নামের মেয়েটি জনের স্ত্রী সেজে শুধু সঙ্গী হয়েই রইলেন। তবে অ্যাকশন প্রিয় বুদ্ধিহীন দর্শকের জন্য “মুম্বই সাগা” গরম গরম চায়ের মতো!

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

অ্যাকশনে ভরপুর ‘মুম্বই সাগা’ কি দর্শকদের মন ছুঁতে পারল?

Update Time : ০৮:৪৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ মার্চ ২০২১

সঞ্জয় গুপ্তা অ্যাকশন ছবির পরিচালক হিসেবে বেশ নামী এবং দামিও। যাঁর ক্রেডিটে ‘কাঁটে’, ‘শুটআউট অ্যাট ওয়াডালা’, ‘শুটআউট অ্যাট লোখন্ডওয়ালার’র মতো বক্সঅফিসে সফল ছবি, তাঁর কাছ থেকে “মুম্বই সাগা” নামের ছবি মানেই অ্যাকশনে ভরপুর ছবি, দর্শক এমনটাই আশা করেন। না, তিনি তাঁর প্রিয় দর্শকদের নিরাশ করবেন না। শুধু পেদিয়ে বৃন্দাবনই নয়, প্রায় স্বর্গ উইথ অপ্সরী দেখিয়ে ছেড়েছেন।
জন আব্রাহাম তাঁর পেয়ারের অ্যাকশন অভিনেতা। এই ছবিতে দাদার এলাকার মস্তান অমর্ত্য হয়ে তিনি কী করতে আর বাকি রেখেছেন! বোধহয় বিমান চালানোটা শুধু দেখাননি। মারপিট করার সবরকম কায়দাই করিয়েছেন।

ছবির সময়কাল আশির দশক। অর্থাৎ বাল ঠাকরের উত্থান ও পল্লবিত হয়ে ওঠার সুসময়। যখন সাম্প্রদায়িক মারাঠি প্রেমে টইটম্বুর বম্বে শহর। যখন থেকে শুরু হল বম্বে কে মুম্বই বলা! সত্যি ঘটনার অনুপ্রেরণায় লেখা চিত্রনাট্য। বুঝতে অসুবিধে হবে না, গাইতন্দে, ভাউ, সদা আনা, পুলিশের জাঁদরেল অ্যাকশন মাস্টার বিজয়ের নামের আড়ালে কে বা কারা রয়েছেন! সঞ্জয় গুপ্তা অতিসাধারণ ও গরিব তরুণ অমর্ত্যকে ধীরে ধীরে আন্ডারওয়ার্ল্ডে নিয়ে আসার কাজটি সাজিয়েছেন ভালই। পেশল চেহারার জনের মধ্যে একজন ‘হিম্যান’কে ঢুকিয়ে দেওয়া খুব একটা কঠিন কাজ ছিল না।
সঞ্জয়ের কেরামতি পরিবেশ তৈরিতে। তিনি মুম্বইয়ের তলপেটের চেহারাটি যেমন তুলে এনেছেন, তেমনই পুলিশ মহলের সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডে মস্তানদের ঘনিষ্ট আঁতাঁতটিও খুব ধীরে ধীরে স্পষ্ট করেছেন। শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার হয় পুলিশের উপরতলার সঙ্গে মস্তান জগৎ – দু’জায়গাতেই ভাউ এবং গাইতন্দের মতো মানুষরাই সবটা নিয়ন্ত্রণ করত। এবং এখনও করে বৈকি! মারাঠি প্রেমের বুলি আওড়াতে গিয়ে ভাউ মহেশ মঞ্জরেকরের গলায় শোনা গেল দু’টো লাগসই সংলাপ – “যো মারাঠিকো টোকেগা, মারাঠি উসকো ঠোকেগা” বা বামপন্থীদের স্লোগান “যখন হারানোর কিছু থাকে না, তখন পাওয়ার জন্য থাকে পুরো পৃথিবী।” কিন্তু সংলাপগুলোর ব্যবহার খুবই চমকপ্রদ।
এই ধরনের ছবির গল্প নিয়ে বলার কিসসু থাকে না, নেইও। শুধু নাটক আর চমক, লন্ডন যাওয়া-আসা টালিগঞ্জ-শ্যামবাজারের মতো। অ্যাকশন দেখানোর জন্য গাড়ি ভাঙচুর, মানুষ পেটানো বা ট্র্যাফিক আইনকে কলা দেখানো তো জলভাত। ওসব নিয়ে প্রশ্ন না তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে শেষ পর্বে দুর্জনের মৃত্যু দেখানো হলেও আবার এক নতুন অমর্ত্যর অঙ্কুরোদ্গম দেখানোয় বোঝা গেল, বম্বে মুম্বই হয়েও এখনও বম্বেতেই রয়েছে। অভিনয় নিয়ে আর কী বলা যায়! জন আব্রাহাম তাঁর শরীরী আবেদনকে যথাসাধ্য ব্যবহার করে অমর্ত্যকে “প্রাণ” দিয়েছেন। মহেশ মঞ্জরেকরের “ভাউ” এবং আমোলে গুপ্তের “গাইতোন্ডে” সত্যিই বাড়তি পাওনা। ইমরান হাশমির বিজয় ইন্সপেক্টর শুধু গর্জন করেই গেলেন, অভিনয়ের সুযোগ আর পেলেন কোথায়! একই কথা প্রতীক বব্বর প্রসঙ্গেও। কাজল আগরওয়াল নামের মেয়েটি জনের স্ত্রী সেজে শুধু সঙ্গী হয়েই রইলেন। তবে অ্যাকশন প্রিয় বুদ্ধিহীন দর্শকের জন্য “মুম্বই সাগা” গরম গরম চায়ের মতো!