সূর্যোদয় প্রতিনিধি : ঝালকাঠীর সুগন্ধা নদীতে এমভি সাগর নন্দিনী-২ নামক তেলবাহী ট্যাংকারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আর এ ঘটনায় বিস্ফোরণের মাত্রাটা এতই ভয়াবহ ছিল যে, জাহাজের মাস্টারব্রিজ ও স্টাফ কেবিনের একটি অংশ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পাশাপাশি পাম্প রুমের ভেতরটা অর্থাৎ মাস্টার ব্রিজের নিচের অংশ লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে জাহাজের পেছনের ওই অংশটি উড়ে গিয়ে নদীতে পড়ে যায়। ঝালকাঠি সদর ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, এ ধরনের বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ড কীভাবে ঘটেছে তার সঠিক কারণ বের করতে হলে সময়ের প্রয়োজন। তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। তবে জাহাজটির স্টাফরা জানিয়েছেন, দুপুরের খাবার খাওয়ার আয়োজন করছিলেন তারা। প্রচণ্ড গরম ছিল। আর তাই জেনারেটর চালু করে বিদ্যুতের ব্যবস্থা সচল করার চিন্তা করেন স্টাফরা। জেনারেটর চালুর সঙ্গে সঙ্গে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে শুনেছি। এদিকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে তাদের সঙ্গে কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আর তারাও তেমন একটা কথা বলতে না পারায় ঘটনায় সময়কার বিবরণ সঠিকভাবে জানা যায়নি। এ বিষয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: মহিতুল ইসলাম জানান, জাহাজটির বাবুর্চি জানিয়েছেন জাহাজটিতে পেট্রোল ও ডিজেল ভর্তি ছিল। বিস্ফোরণের সময় জাহাজের পেছনে মাস্টারব্রিজের অংশটি উড়ে নদীতে পড়ে যায়। তবে কীভাবে বিস্ফোরণটি ঘটেছে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি বাবুর্চি।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ৪-৫ জন নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়েছে জাহাজের বাবুর্চি। আর দগ্ধ ৫ জনকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর ফায়ার স্টেশনের অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে আসি এবং আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। তবে তখন জাহাজটির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছিল না। বলা হচ্ছিল তারা ৯ জন স্টাফ ছিলেন, আবার বলা হচ্ছিল আহত ৫ জন ছাড়া জাহাজে আর কেউ ছিল কি না তাও জানেন না। পরে বিকেল নাগাদ তাদের ৪ জন স্টাফ নিখোঁজ থাকার কথা জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বরিশাল নদী ফায়ার স্টেশনকে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা ডুবুরি দিয়ে নদীতে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করবেন।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া অংশের সঙ্গে জাহাজের কোনো স্টাফও থাকতে পারেন। যিনি আর বের হয়ে আসতে পারেননি।