Dhaka ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে ছিল বিএনপি : মির্জা ফখরুল

আব্দুর রহমান মানিক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপির কমপক্ষে ৪২২ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি ও এর সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল নয়, বিএনপির উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার রাজধানীর গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। আন্দোলনে অংশগ্রহণের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির যে ৬০ লাখ সদস্যের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে, তার সুবিশাল অংশ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, রাষ্ট্রযন্ত্রের ষড়যন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়ায়। এতে যার-যার অবস্থান থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপি ও সমমনা সব রাজনৈতিক দল। মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণকে বারবার ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। তিনি উল্লেখ করেন, ‘১৬ বছরের স্বৈরাচারী দুঃশাসনকে চূর্ণ করে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে যাদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই গণহত্যায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে শহীদ হন ৮৭৫ জন। এর মাঝে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মির্জা ফখরুল জানান, ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা করে পুলিশ। একই দিন চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, বেগবান হয় আন্দোলন। তিনি বলেন, ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় আন্দোলনে পানি বিতরণ করতে গিয়ে, পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ছাত্র মীর মুগ্ধ। একই দিন যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল নেতা ইরফান ভূঁইয়া ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ জাবির। তিনি আরও বলেন, ‘১৭ জুলাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের অভিযানের নামে মঞ্চায়িত হয় সাজানো নাটক, বলপূর্বক বন্ধ করা হয় কার্যালয়ের কার্যক্রম। বাসায়-বাসায় অভিযান চালিয়ে, বিএনপির অর্ধশত প্রথম সারির নেতাসহ ৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এবং কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, জহিরউদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন এ্যানী, শিমুল বিশ্বাস, আমান উল্লাহ আমান, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. রফিকুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিন অসীম, সাইফুল ইসলাম নীরব, আমিনুল হক, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ, নিপুণ রায় চৌধুরী, ডা. শাখাওয়াত শায়ন্তসহ আরও অনেক সক্রিয় নেতা।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা

গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে ছিল বিএনপি : মির্জা ফখরুল

Update Time : ০১:৪৪:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আব্দুর রহমান মানিক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপির কমপক্ষে ৪২২ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি ও এর সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল নয়, বিএনপির উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার রাজধানীর গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। আন্দোলনে অংশগ্রহণের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির যে ৬০ লাখ সদস্যের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে, তার সুবিশাল অংশ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, রাষ্ট্রযন্ত্রের ষড়যন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়ায়। এতে যার-যার অবস্থান থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপি ও সমমনা সব রাজনৈতিক দল। মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণকে বারবার ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। তিনি উল্লেখ করেন, ‘১৬ বছরের স্বৈরাচারী দুঃশাসনকে চূর্ণ করে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে যাদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই গণহত্যায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে শহীদ হন ৮৭৫ জন। এর মাঝে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মির্জা ফখরুল জানান, ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা করে পুলিশ। একই দিন চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, বেগবান হয় আন্দোলন। তিনি বলেন, ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় আন্দোলনে পানি বিতরণ করতে গিয়ে, পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ছাত্র মীর মুগ্ধ। একই দিন যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল নেতা ইরফান ভূঁইয়া ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ জাবির। তিনি আরও বলেন, ‘১৭ জুলাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের অভিযানের নামে মঞ্চায়িত হয় সাজানো নাটক, বলপূর্বক বন্ধ করা হয় কার্যালয়ের কার্যক্রম। বাসায়-বাসায় অভিযান চালিয়ে, বিএনপির অর্ধশত প্রথম সারির নেতাসহ ৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এবং কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, জহিরউদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন এ্যানী, শিমুল বিশ্বাস, আমান উল্লাহ আমান, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. রফিকুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিন অসীম, সাইফুল ইসলাম নীরব, আমিনুল হক, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ, নিপুণ রায় চৌধুরী, ডা. শাখাওয়াত শায়ন্তসহ আরও অনেক সক্রিয় নেতা।