তপন তালুকদার : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। নিয়মিত কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিএনপির মহাসচিবসহ দলের বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্যরা। বিএনপি নেতারা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় শুধু জনসমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসা কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষমতায় যেতে হলে জনসমর্থনের পাশাপাশি কূটনৈতিক সফলতাও লাগবে।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে তারা আশাবাদী। কেবল একটি দলকে সাপোর্ট করার নীতি থেকে দেশটির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপি বলছে, কূটনীতিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার পাশাপাশি বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন তারা। এর মধ্যে দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন সারা দেশে যেসব রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ভোটে অনিয়মের যেসব তথ্য আগে সংগ্রহ করা ছিল সেগুলোর সঙ্গে নতুন করে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেগুলো একত্র করে একটি ডকুমেন্টারি বা তথ্যচিত্র তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করা হবে। এই তথ্যচিত্র কূটনীতিকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এছাড়া ২০০৯ সাল থেকে সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, নির্যাতনের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদেরও একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। তার ভিত্তিতেও একটি তথ্যচিত্র তৈরি করবে বিদেশ বিষয়ক কমিটি। সেটিও কূটনীতিকদের কাছে দেওয়া হবে। এগুলোর উদ্দেশ্য একটাই, অতীতে সুষ্ঠু ভোটে কারা বাধা দিয়েছিলেন এবং ভবিষ্যতে তাদের অধীনে কেমন নির্বাচন হতে পারে সেটা কূটনীতিকদের সামনে তুলে ধরা। এদিকে গত ৪ জুন জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। এরপর ৬ জুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া গত ৫ জুন স্পেনের নতুন রাষ্ট্রদূত এবং গত ৮ জুন অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে করেন বিএনপির বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্যরা। কমিটির সদস্যরা বলছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের বৈঠক ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওই বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের অধীনে বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে।