সূর্যোদয় ডেস্ক : ডলার সংকটের কারণে কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় বন্ধ হওয়ার পথে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ফলে মজুদ কয়লা দিয়ে আগামী ২ জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে বাড়বে লোডশেডিং। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যৌথ মালিকানায় রয়েছে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডবিøউপিজিসিএল) ও চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি)। দুটো প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।
বিসিপিসিএল সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা আমদানির জন্য সিএমসি অর্থ ব্যয় করে। আমদানির ক্ষেত্রে ডেফার্ড পেমেন্ট (দেরিতে পরিশোধ) হিসেবে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কয়লা আমদানির মোট বিল বকেয়া পড়েছে ২৯৩ মিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ১৩৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। যা পরিশোধ না করা হলে কয়লার জন্য আর অর্থ দেবে না সিএমসি।
পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দৈনিক প্রয়োজন ১২ হাজার টন কয়লার। প্রতি মাসে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টন। কেন্দ্রটিতে কয়লা সরবরাহ করে ইন্দোনেশিয়ান কোম্পানি পিটি বায়ান রিসোর্স টিবিক। তবে, অর্থ পরিশোধ না করায় কোম্পানিটিও আর কয়লা সরবরাহ করবে না বলে জানানো হয়েছে। অপরদিকে কয়লা সরবরাহ করে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় সিএমসির ওপর কয়লা আমদানির নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। বকেয়া পরিশোধের জন্য বিসিপিসিএলকে চিঠি দিয়েছে সিএমসি। যা অর্থ মন্ত্রণালয় ও পিডিবিকে অবহিত করে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধে আপাতত সক্ষম নয় পিডিবি।
এ প্রসঙ্গে বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, ডলার পরিশোধ না করায় আগেই কয়লার চালান বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যতটুকু কয়লা মজুদ আছে তা দিয়ে আগামী কয়েকদিন প্লান্ট চালু রাখা যাবে। মূল সমস্যা হলো ডলার সংকট। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা ১০ কোটি ডলার প্রদানের একটা ব্যবস্থা করছে। যদিও তা যথেষ্ট নয়। এছাড়া বিল পরিশোধ করে নতুন করে কয়লা আমদানি করতে ২৫ দিন সময় লেগে যাবে। ফলে জুনের প্রায় পুরোটা সময় প্লান্ট বন্ধ থাকবে। দেশে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট হলেও প্রকৃত উৎপাদন ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট। যা বরিশাল ও খুলনা ছাড়াও ঢাকায় সরবরাহ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে চাহিদা ও উৎপাদনে একটি বড় পার্থক্য তৈরি হবে। পায়রার উৎপাদন বন্ধ হলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে যাবে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে বকেয়া পরিশোধ করে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখার।