০৮:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুই দেশের আগ্রহ

  • আপডেট: ০৪:১৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩
  • 2029

চট্টগ্রাম ব্যুরো : জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া দুই দেশই নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাছে পৃথক প্রস্তাবও দিয়েছে দেশ দুটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন দুই প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে চসিক। তবে মন্ত্রণালয় উল্টো চসিকের কাছে মতামত চেয়েছে। এতে ‘দ্বিধায়’ পড়ে সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করা প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে জাপানের জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দ্যা কোরিয়া এনভারনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজি ইনিস্টিটিউট(কেইআইটিআই)। বিশ্ব ব্যাংকও কেইআইটিআই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। এর মধ্যে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করতে জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এর সঙ্গে এলওআই বা লেটার অব ইন্টেন্ট করার জন্য চসিককে কিছুদিন আগে অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এদিকে কেইআইটিআই প্রি–ফিজিবিলিটি স্টাডি (প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই) করতে চায়। যা মন্ত্রণালয়কে জানায় চসিক।

এ অবস্থায় গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে চসিকের কাছে সু–স্পষ্ট মতামত চাওয়া হয়েছে। এছাড়া কেইআইটিআই এবং বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ কৌশলগত সহযোগিতায় প্রি–ফিজিবিলিট স্টাডির প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। মনে হয় এ সপ্তাহ লাগতে পারে।

কি করতে চায় ‘জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ : ‘জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট’ (কম্পোস্ট প্ল্যাান্ট, ল্যান্ড ফিল সাইট) প্রকল্পের আগ্রহ দেখায়। এর পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রস্তাব দেয় চসিককে। এ বিষয়ে দুই দফা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেয়ার পর গত ২৬ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে চসিককে এলওআই অনুমোদন ও জেএফই’র সঙ্গে স্বাক্ষরের অনুমতি দেয়। এরই মধ্যে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত একটি সমীক্ষায় চালায় ‘জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’। তাদের সঙ্গে ছিল দেশটির ‘ইয়চিও ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানও। গত ফেব্রæয়ারি মাসে প্রকাশিত সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, নগরে দৈনিক উৎপাদিত বর্জ্য থেকে মাত্র এক হাজার টন ব্যবহার করে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এতে বলা হয়, নগরের দুটি বর্জ্যাগার বা ল্যান্ডফিল ব্যবহার অনুপযোগী হচ্ছে। এর মধ্যে হালিশহর বর্জ্যাগার ১৪ মাস এবং আরেফিন নগর বর্জ্যাগারে আর পাঁচ মাস বর্জ্য ফেলা যাবে। তাই নতুন ল্যান্ডফিলকে ঘিরে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব করা হয়।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে নগরে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ, এর ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল গঠন, বর্জ্যে ক্যালোরিফিকের পরিমাণ (দহন মাত্রা), সংগ্রহ ও অপসারণের পরিমাণ এবং সর্বোপরি বর্জ্য ট্রিটমেন্টের যথাযথ টেকনোলজি নির্ধারণে প্রস্তাব করে। তাছাড়া চসিক এলাকায় ক্রমশ বর্জ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ল্যান্ডফিলের স্থান স্বল্পতা প্রভৃতি সমস্যা সমাধানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের উপর জোর দেয়া হয়। এছাড়া উৎসস্থল থেকেই বর্জ্য পৃথকীকরণের উপর জোর দেয়া হয়।

সর্বাধিক পঠিত

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার

চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুই দেশের আগ্রহ

আপডেট: ০৪:১৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো : জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া দুই দেশই নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাছে পৃথক প্রস্তাবও দিয়েছে দেশ দুটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন দুই প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে চসিক। তবে মন্ত্রণালয় উল্টো চসিকের কাছে মতামত চেয়েছে। এতে ‘দ্বিধায়’ পড়ে সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করা প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে জাপানের জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দ্যা কোরিয়া এনভারনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজি ইনিস্টিটিউট(কেইআইটিআই)। বিশ্ব ব্যাংকও কেইআইটিআই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। এর মধ্যে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করতে জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এর সঙ্গে এলওআই বা লেটার অব ইন্টেন্ট করার জন্য চসিককে কিছুদিন আগে অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এদিকে কেইআইটিআই প্রি–ফিজিবিলিটি স্টাডি (প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই) করতে চায়। যা মন্ত্রণালয়কে জানায় চসিক।

এ অবস্থায় গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে চসিকের কাছে সু–স্পষ্ট মতামত চাওয়া হয়েছে। এছাড়া কেইআইটিআই এবং বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ কৌশলগত সহযোগিতায় প্রি–ফিজিবিলিট স্টাডির প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। মনে হয় এ সপ্তাহ লাগতে পারে।

কি করতে চায় ‘জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ : ‘জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট’ (কম্পোস্ট প্ল্যাান্ট, ল্যান্ড ফিল সাইট) প্রকল্পের আগ্রহ দেখায়। এর পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রস্তাব দেয় চসিককে। এ বিষয়ে দুই দফা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেয়ার পর গত ২৬ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে চসিককে এলওআই অনুমোদন ও জেএফই’র সঙ্গে স্বাক্ষরের অনুমতি দেয়। এরই মধ্যে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত একটি সমীক্ষায় চালায় ‘জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’। তাদের সঙ্গে ছিল দেশটির ‘ইয়চিও ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানও। গত ফেব্রæয়ারি মাসে প্রকাশিত সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, নগরে দৈনিক উৎপাদিত বর্জ্য থেকে মাত্র এক হাজার টন ব্যবহার করে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এতে বলা হয়, নগরের দুটি বর্জ্যাগার বা ল্যান্ডফিল ব্যবহার অনুপযোগী হচ্ছে। এর মধ্যে হালিশহর বর্জ্যাগার ১৪ মাস এবং আরেফিন নগর বর্জ্যাগারে আর পাঁচ মাস বর্জ্য ফেলা যাবে। তাই নতুন ল্যান্ডফিলকে ঘিরে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব করা হয়।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে নগরে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ, এর ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল গঠন, বর্জ্যে ক্যালোরিফিকের পরিমাণ (দহন মাত্রা), সংগ্রহ ও অপসারণের পরিমাণ এবং সর্বোপরি বর্জ্য ট্রিটমেন্টের যথাযথ টেকনোলজি নির্ধারণে প্রস্তাব করে। তাছাড়া চসিক এলাকায় ক্রমশ বর্জ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ল্যান্ডফিলের স্থান স্বল্পতা প্রভৃতি সমস্যা সমাধানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের উপর জোর দেয়া হয়। এছাড়া উৎসস্থল থেকেই বর্জ্য পৃথকীকরণের উপর জোর দেয়া হয়।