সূর্যোদয় প্রতিবেদক : রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন মোল্লাকে (২২) নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে । পুলিশ বলছে, ব্যবসা করে লাভ দেওয়ার কথা বলে ইকরামের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন তার বন্ধু শান্ত। ডিএমপির গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের তদন্ত কর্মকর্তারা জানান , রমজান মাসে লাভসহ টাকা ফেরত দেওয়ার সময় টাকা কম দেখে তা নেননি ইকরাম। এ নিয়ে শান্তর সঙ্গে তার মনোমালিন্য তৈরি হয়। এর জেরেই বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার বালুর মাঠে গলা কেটে এবং হাতুড়ি দিয়ে মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ইকরামকে। ইকরামের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সরাসরি হত্যাকাÐের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার ৫ মে তার দুই বন্ধু শান্ত (২৩) ও সিদ্দিককে (২৩) থানায় নিয়ে আসা হয়। তদন্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাÐে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন তারা। পরে দায়েরকৃত হত্যা মামলায় দুই জনকে আসামি করে আদালতে পাঠানো হয়। এ হত্যাকাÐের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন শান্ত। আর আদালতের আদেশে দুই দিনের রিমান্ডে রয়েছেন সিদ্দিক। নিহত ইকরামের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার ৪ মে খিলক্ষেতের বাসা থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যান শান্ত। এরপর থেকেই কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ইকরামের। ঘটনার পরদিন শুক্রবার ৫ মে খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন পরিবারের সদস্যরা। তখন এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে, ব্যবসায়িক কারণে শান্তকে দুই লাখ টাকা দেন ইকরাম। পরবর্তীতে লভ্যাংশসহ টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে বেশ কয়েকবার তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। শনিবার ৬ মে দুপুরে খিলক্ষেতের বালুর মাঠের একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয় ইকরামের গলাকাটা মরদেহ। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ হন শান্ত। এছাড়া শান্তর বন্ধু সিদ্দিক ছিল এলাকায় বেপরোয়া এবং মাদকসেবী। বিষয়টি সিদ্দিকের পরিবারকে জানিয়ে দেন ইকরাম। মা বিষয়টি জানতে পেরে সিদ্দিককে বাসা থেকে বের করে দেন। এসব মিলিয়ে শান্ত ও সিদ্দিক মিলে ইকরামকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। নিহত ইকরামের বাবা কবির হোসেন জানান, শান্ত ও সিদ্দিক মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই। লাশ উদ্ধারের পর থেকে একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আহাজারি কমছেই না ইকরামের মা আফিয়া বেগমের। তিনি এ হত্যাকাÐে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষার্থী নিখোঁজের পর তার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি দ্রæত সময়ের মধ্যে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা এ হত্যাকাÐ সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছি।
শিরোনাম: