মোঃ সিরাজুল মনির, চট্টগ্রাম থেকে : ২০২৩ সালের পুরো বছর ধরেই চট্টগ্রামে চড়া ভোগ্যপণ্যের বাজার। বিভিন্ন পণ্েযর পাশাপাশি নানা অজুহাতে এবার চড়া হতে শুরু করেছে শুঁটকির বাজার। গত ছয়মাসের ব্যবধানে রাঙ্গাবালি, লাক্ষা, লইট্টা, চিংড়িসহ বিভিন্ন শুঁটকির দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৪শ টাকায়। পাশাপাশি বিভিন্ন সবজির কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাছের দামেও স্বস্তি পাচ্ছে না সাধারণ ক্রেতারা। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে সাইজ অনুযায়ী লইট্টা ৮শ, ফাইস্যা ৫৫০, পোপা ও রিকশা ৪৫০ থেকে ৫শ এবং হিছুটিমলা ও ফেওয়া শুঁটকি ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ১শ টাকা বেড়ে চাপা শুঁটকি ৪৫০, সিদল শুঁটকি ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কেজিতে ২শ টাকা বেড়ে রাঙ্গাবালি শুঁটকি ৩ হিজার ৪শ, কেজিতে ৩শ টাকা বেড়ে চিংড়ি ৮৫০ এবং কেজিতে ৪শ টাকা বেড়ে ৪ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি রুপচাঁদা শুঁটকি ৩ হাজার ৫শ ও ছুরি শুঁটকি মানভেদে ৮শ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাক্তাই এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, সাগরে মাছ কমে গেছে। তার উপর লবণের দাম বাড়তি। সবমিলিয়ে শুঁটকি উৎপাদন তুলনামূলক কমে গেছে। তাই দাম বেড়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্যতম কাচাবাজার কর্ণফুলীতে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি বরবটি ১০০/১২০ টাকা,ঢেঁড়শ ৮০, কচুর লতি ৮০, পটল ৬০, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি গাঁজর ৩০, মিষ্টিকুমড়া ৪০, শসা ৫০, চিচিঙ্গা ৬০ ও বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কর্ণফুলী বাজারে সবজি বিক্রেতা মো. সোলায়মান বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় সবজির উৎপাদন কম। তাই আড়তদাররা বেশি দামে সবজি বিক্রি করায় খুচরায় দাম বেড়ে গেছে।
এমনকি সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ভাতের প্লেটে উঠা বিভিন্ন রকমের শাক ও অনেক চড়া দাম দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি তেলাপিয়া আকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০, কাতলা ২৩০ থেকে ৩০০ ও রুই ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি কই ২৮০ থেকে ৩শ, শোল ৫৫০ ও গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কর্ণফুলী বাজারে মাছ বিক্রেতা শফি বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ কম। তাই সব ধরনের মাছের কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কমতে শুরু করেছে মুরগির দাম। গতসপ্তাহে কেজিপ্রতি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি আজ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৪০ ও দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি হাড়সহ গরুর মাংস ৮০০ টাকায় ও হাড়ছাড়া গরুর মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া বাজারে প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল ১৩৫, মোটা দানার মসুর ডাল ১১০, ছোলা মানভেদে ৮২ থেকে ৯০, পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ ও রসুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আদা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
এছাড়া নগরীর বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় প্রায় বাজারে ক্রেতা বিক্রেতা পণ্েযর দাম নিয়ে বাকবিতন্ডা লেগেই আছে। অক্সিজেন কাচা বাজারের ব্যবসায়ী ফরিদ বলেন অনেক পণ্য অবস্থান ভেদে মূল্য নির্ধারন হয়। বেসরকারী চাকরীজীবি মোহাম্মদ হুমায়ুন বলেন পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজার প্রায় তিনগুন পার্থক্য রয়েছে। কোন পণ্য পাইকারি ২০ টাকা কেজিতে কিনে আনলে খুচরা বাজারে তা হয়ে যায় পঞ্চাশ টাকা। বাজারভিক্তিক মনিটরিং টিম গঠন পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান ক্রেতারা।
শিরোনাম:
চট্টগ্রামে চড়া ভোগ্যপণ্যের বাজার, অস্বস্তিতে সাধারণ মানুষ
সর্বাধিক পঠিত