Dhaka ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা

তপন তালুকদার: আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আজ ৬ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট।২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়লেও ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আগামী অর্থবছর ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি, যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি ঋণ। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। ঘোষিত বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবন সহায়ক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা উন্নত ও সম্প্রসারিতকরণ, তরুণদের প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, সম্ভাব্য সব সেবা ডিজিটালাইজ করাসহ সর্বস্তরে প্রযুক্তির ব্যবহার, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, ২০৩১ সালের মধ্যে অতি দারিদ্র্য নির্মূলকরণ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ সাধারণ দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনা, শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ, জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিতামূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখা। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ আমাদের সব গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের প্রকৃত দাবিদার। এ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ আমরা দুর্দমনীয় গতিতে ছুটে চলেছি প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করে আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ নিশ্চিত করেছি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ঢাকা টু আগরতলা লংমার্চের ঘোষণা বিএনপির ৩ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা

Update Time : ০৬:৩২:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

তপন তালুকদার: আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আজ ৬ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট।২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়লেও ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আগামী অর্থবছর ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি, যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি ঋণ। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। ঘোষিত বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবন সহায়ক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা উন্নত ও সম্প্রসারিতকরণ, তরুণদের প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, সম্ভাব্য সব সেবা ডিজিটালাইজ করাসহ সর্বস্তরে প্রযুক্তির ব্যবহার, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, ২০৩১ সালের মধ্যে অতি দারিদ্র্য নির্মূলকরণ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ সাধারণ দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনা, শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ, জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিতামূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখা। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ আমাদের সব গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের প্রকৃত দাবিদার। এ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ আমরা দুর্দমনীয় গতিতে ছুটে চলেছি প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করে আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ নিশ্চিত করেছি।