Dhaka ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:২৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩
  • 35

তপন তালুকদার : টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বির্স্তীণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শঙ্খনদী,ডলুনদী ও হাঙ্গরখালের পানি। শঙ্খনদীর বিভিন্নস্থানে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় সাতকানিয়ার বির্স্তীণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সোমবার দুপুর থেকে সাতকানিয়ার ছদাহা ও কেওচিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তিস্থল দস্তিদার হাট এলাকায় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ।

প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, উপজেলার ধর্মপুর, বাজালিয়া, কালিয়াইশ নলুয়া ও চরতী এলাকায় শঙ্খ নদীর পানি প্রবেশ করছে। সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন,সাতকানিয়া পৌরসভা,পশ্চিম ঢেমশা, এওচিয়া ও আমিলাইষ ইউনিয়নের একাংশে বাঁধের প্রবেশ করছে ডলু নদীর করাল স্রোত। অপরদিকে উপজেলার ছদাহা, কেওচিয়া ও বাজালিয়ার একাংশে হাঙ্গর খালের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

ফলে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে সাতকানিয়া পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়, সাতকানিয়া ভূমি অফিস,সাতকানিয়া থানাসহ আরো বেশ কিছু সরকারি অফিসে পানি প্রবেশ করেছে। দেওয়ান হাট বাজারে কোমর পরিমাণ পানি লক্ষ্য করা গেছে। বন্ধ রয়েছে দোকান-পাট। সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে যোগাযোগ। উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের এফ রহমান সড়ক অনন্তত তিনফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। কেওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ কার্যত গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে।

১২ নং ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন টিপু দৈনিক সূর্যোদয়কে জানান, ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজের বসতঘর ছেড়ে অন্যত্রে অবস্থান নিয়েছে। তিনি আরো জানান, আমরা আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে বাজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কে স্থান ঠিক করেছি। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। সবাই সচেতন থাকবেন আমাদের আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য এলাকায় অবস্থান করতেছে। আমিও এলাকায় আছি ধর্মপুরবাসী পাশে থাকলে ইনশাআল্লাহ্ যেকোন পরিস্থিতি অতীতের মতন মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো।

চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াররম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী বলেন, চরতী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজের বসতঘর ছেড়ে অন্যত্রে অবস্থান নিয়েছে। পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য লোকজনকে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে চলে যাওয়ার জন্য ব্যাপক মাইকিং করা হয়।

সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমী) আরাফাত সিদ্দিকী বলেন,সোমবার ভোর থেকে সাতকানিয়া ভূমি অফিসসহ আশপাশ এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে ব্যাহত হয় কার্যক্রম। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বন্যা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার পানি বন্দি থাকা লোকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় অস্থায়ী ভাবে ঘোষিত আশ্রয়ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের মাঝে বিতরণের জন্য দশ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেয়ে হয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

Update Time : ০৪:২৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩

তপন তালুকদার : টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বির্স্তীণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শঙ্খনদী,ডলুনদী ও হাঙ্গরখালের পানি। শঙ্খনদীর বিভিন্নস্থানে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় সাতকানিয়ার বির্স্তীণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সোমবার দুপুর থেকে সাতকানিয়ার ছদাহা ও কেওচিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তিস্থল দস্তিদার হাট এলাকায় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ।

প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, উপজেলার ধর্মপুর, বাজালিয়া, কালিয়াইশ নলুয়া ও চরতী এলাকায় শঙ্খ নদীর পানি প্রবেশ করছে। সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন,সাতকানিয়া পৌরসভা,পশ্চিম ঢেমশা, এওচিয়া ও আমিলাইষ ইউনিয়নের একাংশে বাঁধের প্রবেশ করছে ডলু নদীর করাল স্রোত। অপরদিকে উপজেলার ছদাহা, কেওচিয়া ও বাজালিয়ার একাংশে হাঙ্গর খালের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

ফলে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে সাতকানিয়া পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়, সাতকানিয়া ভূমি অফিস,সাতকানিয়া থানাসহ আরো বেশ কিছু সরকারি অফিসে পানি প্রবেশ করেছে। দেওয়ান হাট বাজারে কোমর পরিমাণ পানি লক্ষ্য করা গেছে। বন্ধ রয়েছে দোকান-পাট। সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে যোগাযোগ। উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের এফ রহমান সড়ক অনন্তত তিনফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। কেওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ কার্যত গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে।

১২ নং ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন টিপু দৈনিক সূর্যোদয়কে জানান, ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজের বসতঘর ছেড়ে অন্যত্রে অবস্থান নিয়েছে। তিনি আরো জানান, আমরা আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে বাজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কে স্থান ঠিক করেছি। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। সবাই সচেতন থাকবেন আমাদের আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য এলাকায় অবস্থান করতেছে। আমিও এলাকায় আছি ধর্মপুরবাসী পাশে থাকলে ইনশাআল্লাহ্ যেকোন পরিস্থিতি অতীতের মতন মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো।

চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াররম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী বলেন, চরতী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজের বসতঘর ছেড়ে অন্যত্রে অবস্থান নিয়েছে। পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য লোকজনকে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে চলে যাওয়ার জন্য ব্যাপক মাইকিং করা হয়।

সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমী) আরাফাত সিদ্দিকী বলেন,সোমবার ভোর থেকে সাতকানিয়া ভূমি অফিসসহ আশপাশ এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে ব্যাহত হয় কার্যক্রম। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বন্যা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার পানি বন্দি থাকা লোকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় অস্থায়ী ভাবে ঘোষিত আশ্রয়ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের মাঝে বিতরণের জন্য দশ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেয়ে হয়েছে।