Dhaka ০২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • 1

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে দিনদুপুরে আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৬) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে ‘সাজ্জাদ বাহিনী’। ২১ অক্টোবর সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আফতাব উদ্দিন তাহসিন চান্দগাঁও থানার হাজিরপুলের মোহাম্মদ মুসার ছেলে। স্থানীয় ছাত্রলীগের এই কর্মী নগরের ওমরগণি এম.ই.এস. কলেজের ছাত্র ছিলেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আরশাদুল আলম বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে ছাত্রলীগের কোনও পদে ছিলেন না। পড়াশোনার পাশাপাশি ইট ও বালুর ব্যবসা করতেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিবির-ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে এসে গুলি করে চলে যান। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সময়ে আশপাশে লোকজন থাকলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়ার উদুপাড়া এলাকায় আফতাব তার ব্যবসার জন্য আনা বালু ও ইট রাখেন। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে মজুতের জন্য এক ট্রাক বালু আনা হয়। এ কারণে আফতাব সেখানে আসেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে একটি নোহা মাইক্রোবাস আসে। প্রথমে গাড়ির ভেতর থেকে আফতাবকে লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়া হয়। এরপর ছোট সাজ্জাদ ও তার সহযোগী মাহমুদ, হাছানসহ চার জন গাড়ি থেকে নেমে গুলি করতে থাকেন। তারা আফতাবের ঊরু ও পায়ে পরপর চারটি গুলি করে চলে যান। এতে মৃত্যু হয়। নিহত আফতাবের ছোট ভাই মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধে আমার ভাই ফেসবুকে লেখালেখি করতেন। ইট ও বালুর ব্যবসা করতে হলে ভাইয়ের কাছে চাঁদাও চেয়েছেন। এ কারণে দুই মাস আগে আদালতে জিডি করেন। আজ বিকালে প্রকাশ্যে সাজ্জাদ ও তার বাহিনী গুলি করে হত্যা করে চলে যান। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মামলা কিংবা অভিযোগ করেও কোনও লাভ হবে না। কারণ সাজ্জাদকে কেউ গ্রেফতার করবে না। এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘সন্ত্রাসী সাজ্জাদই গুলি করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সেখানে গুলি ছুড়েছেন সাজ্জাদ ও তার বাহিনী। এ ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসে। তবে ভয়ে ভবন মালিকরা মামলা করেননি। ওই ঘটনার আগে ৩০ আগস্ট একই এলাকায় দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের। কিন্তু এরপরও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা

Update Time : ০২:০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে দিনদুপুরে আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৬) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে ‘সাজ্জাদ বাহিনী’। ২১ অক্টোবর সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আফতাব উদ্দিন তাহসিন চান্দগাঁও থানার হাজিরপুলের মোহাম্মদ মুসার ছেলে। স্থানীয় ছাত্রলীগের এই কর্মী নগরের ওমরগণি এম.ই.এস. কলেজের ছাত্র ছিলেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আরশাদুল আলম বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে ছাত্রলীগের কোনও পদে ছিলেন না। পড়াশোনার পাশাপাশি ইট ও বালুর ব্যবসা করতেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিবির-ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে এসে গুলি করে চলে যান। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সময়ে আশপাশে লোকজন থাকলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়ার উদুপাড়া এলাকায় আফতাব তার ব্যবসার জন্য আনা বালু ও ইট রাখেন। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে মজুতের জন্য এক ট্রাক বালু আনা হয়। এ কারণে আফতাব সেখানে আসেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে একটি নোহা মাইক্রোবাস আসে। প্রথমে গাড়ির ভেতর থেকে আফতাবকে লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়া হয়। এরপর ছোট সাজ্জাদ ও তার সহযোগী মাহমুদ, হাছানসহ চার জন গাড়ি থেকে নেমে গুলি করতে থাকেন। তারা আফতাবের ঊরু ও পায়ে পরপর চারটি গুলি করে চলে যান। এতে মৃত্যু হয়। নিহত আফতাবের ছোট ভাই মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধে আমার ভাই ফেসবুকে লেখালেখি করতেন। ইট ও বালুর ব্যবসা করতে হলে ভাইয়ের কাছে চাঁদাও চেয়েছেন। এ কারণে দুই মাস আগে আদালতে জিডি করেন। আজ বিকালে প্রকাশ্যে সাজ্জাদ ও তার বাহিনী গুলি করে হত্যা করে চলে যান। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মামলা কিংবা অভিযোগ করেও কোনও লাভ হবে না। কারণ সাজ্জাদকে কেউ গ্রেফতার করবে না। এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘সন্ত্রাসী সাজ্জাদই গুলি করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সেখানে গুলি ছুড়েছেন সাজ্জাদ ও তার বাহিনী। এ ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসে। তবে ভয়ে ভবন মালিকরা মামলা করেননি। ওই ঘটনার আগে ৩০ আগস্ট একই এলাকায় দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের। কিন্তু এরপরও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।