০৫:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরে ফেসবুক লাইভ দিয়ে আদালত ভবন থেকে লাপিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

  • আপডেট: ১০:৫০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১
  • 656

নিজস্ব প্রতিবেদক:
লক্ষ্মীপুরে বড় ভাইয়ের দেয়া চুরির অপবাধ সহিতে না পেরে ফেসবুকে লাইভ দিয়ে জজ আদালতের ভবন থেকে লাপিয়ে পড়ে রাকিব হোসেন রোমান নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের জেলা জজ আদলতের ৬ তলার উপর থেকে পড়ে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এদিকে রোমানের মৃত্যুর খবর শুনে স্বজনদের কান্নায় হাসপাতাল এলাকা ভারি হয়ে উঠে।

নিহত রোমান সদর উপজেলার উত্তর মজুপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। সুমাইয়া নামে তার এক স্ত্রী রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোমান তাঁর বড় ভাই সোহেলের ভাঙারি দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করতো। কিছুদিন পূর্বে ভাংগারি দোকন থেকে তামার যন্ত্রাংশ খোয়া যায়। এ নিয়ে বড় ভাই রাগ করে তাকে চুরি অপবাধ দিয়ে দোকান থেকে তাড়িয়ে দেয়। বড় ভাইয়ের দেয়া চুরির অপবাধ সহিতে না পেরে রাগে-অভিমানে জেলা জজ আদালতের ৬ তলা ভবনের ছাদ উঠে ফেসবুক লাইভে আসে রোমান। ফেসবুক লাইভে নিজেকে চোর নয় বলে দাবী করে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চায় সে। এসময় নিজের ব্যাংক হিসাব ও গোপন ডিজিট নাম্বার বলে এবং নিজের মৃত্যুর জন্য কেউ দায় নয় বলে ছাদ থেকে লাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে সে।

সে বলে, ‘মা আই সজ্ঞানে মইরতে যাইতাছি। আই তামা চুরি করি ন মা। জীবনে অনেক ভুল কইরছি মা। আর মৃত্যুর লাই কেউ দায়ী নাই। আই নিজের ইচ্ছায় যাইতাছি মা। অনেক ভুল কইরছি মা। একটা মাইয়ার জীবনও নষ্ট কইরছি। আইয় সুমাইয়ারে বিয়া কইরছি। বিয়া করি সুখী হইতে পাইরতাছি না। আর কইলজা হাডি যা। আর অ্যাকাউন্টে ৭৫ হাজার টাকা আছে মা। সোহেল ভাইয়ের তন তামা চুরি কইরছি, হেতেনে জানে। হেতেনের তন হেগুন লন লাইগতো ন। বাড়ির ড্রয়ারের মধ্যে আর এটিএম কার্ড আছে।’ মায়ের উদ্দেশ্যে রাকিব হোসেন এটিএম কার্ডের পিন নম্বরও বলেছেন ফেসবুকে লাইভের ভিডিওটিতে।

এদিকে ছোট ভাইয়ের আত্মহত্যার খবর শুনে হাসপাতালে দৌড়ে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বড় ভাই সোহেল। তিনি আহাজারি করে বলতে থাকেন, এটাই বুঝি আমার শাস্তি ছিলো, ব্যবসায়িক কারণে শাসন করার জন্য দোকান থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম। তাই বলে সে আত্মহত্যা করবে। এমন ঘটনা ঘটবে জানলে কখনো বলতাম না।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিমতানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, যুবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। তবে আত্মহত্যার কারণ এখনো জানা যায়নি। খোজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সর্বাধিক পঠিত

সোহাগ হত্যায় জড়িত আরও একজন নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুরে ফেসবুক লাইভ দিয়ে আদালত ভবন থেকে লাপিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

আপডেট: ১০:৫০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:
লক্ষ্মীপুরে বড় ভাইয়ের দেয়া চুরির অপবাধ সহিতে না পেরে ফেসবুকে লাইভ দিয়ে জজ আদালতের ভবন থেকে লাপিয়ে পড়ে রাকিব হোসেন রোমান নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের জেলা জজ আদলতের ৬ তলার উপর থেকে পড়ে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এদিকে রোমানের মৃত্যুর খবর শুনে স্বজনদের কান্নায় হাসপাতাল এলাকা ভারি হয়ে উঠে।

নিহত রোমান সদর উপজেলার উত্তর মজুপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। সুমাইয়া নামে তার এক স্ত্রী রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোমান তাঁর বড় ভাই সোহেলের ভাঙারি দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করতো। কিছুদিন পূর্বে ভাংগারি দোকন থেকে তামার যন্ত্রাংশ খোয়া যায়। এ নিয়ে বড় ভাই রাগ করে তাকে চুরি অপবাধ দিয়ে দোকান থেকে তাড়িয়ে দেয়। বড় ভাইয়ের দেয়া চুরির অপবাধ সহিতে না পেরে রাগে-অভিমানে জেলা জজ আদালতের ৬ তলা ভবনের ছাদ উঠে ফেসবুক লাইভে আসে রোমান। ফেসবুক লাইভে নিজেকে চোর নয় বলে দাবী করে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চায় সে। এসময় নিজের ব্যাংক হিসাব ও গোপন ডিজিট নাম্বার বলে এবং নিজের মৃত্যুর জন্য কেউ দায় নয় বলে ছাদ থেকে লাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে সে।

সে বলে, ‘মা আই সজ্ঞানে মইরতে যাইতাছি। আই তামা চুরি করি ন মা। জীবনে অনেক ভুল কইরছি মা। আর মৃত্যুর লাই কেউ দায়ী নাই। আই নিজের ইচ্ছায় যাইতাছি মা। অনেক ভুল কইরছি মা। একটা মাইয়ার জীবনও নষ্ট কইরছি। আইয় সুমাইয়ারে বিয়া কইরছি। বিয়া করি সুখী হইতে পাইরতাছি না। আর কইলজা হাডি যা। আর অ্যাকাউন্টে ৭৫ হাজার টাকা আছে মা। সোহেল ভাইয়ের তন তামা চুরি কইরছি, হেতেনে জানে। হেতেনের তন হেগুন লন লাইগতো ন। বাড়ির ড্রয়ারের মধ্যে আর এটিএম কার্ড আছে।’ মায়ের উদ্দেশ্যে রাকিব হোসেন এটিএম কার্ডের পিন নম্বরও বলেছেন ফেসবুকে লাইভের ভিডিওটিতে।

এদিকে ছোট ভাইয়ের আত্মহত্যার খবর শুনে হাসপাতালে দৌড়ে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বড় ভাই সোহেল। তিনি আহাজারি করে বলতে থাকেন, এটাই বুঝি আমার শাস্তি ছিলো, ব্যবসায়িক কারণে শাসন করার জন্য দোকান থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম। তাই বলে সে আত্মহত্যা করবে। এমন ঘটনা ঘটবে জানলে কখনো বলতাম না।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিমতানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, যুবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। তবে আত্মহত্যার কারণ এখনো জানা যায়নি। খোজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।