Dhaka ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে: প্রধানমন্ত্রী

তপন তালুকদার: আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৯ ডিসেম্বর শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে। তারা যেমন ট্রেনিংয়ে গেছে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রেও সহযোগিতা করেছে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নানা নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া নিজের স্বামীর নামে স্কুল করেছেন। সেখানে ছাত্রী পাওয়া যেত না। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করতেন। সেখানেও নানা বাধার সম্মুখীন হন। তিনি তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, যাহা পুরুষ পারিবে, তাহা নারীও পারিবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা আফসোস রয়ে গেছে আমার, খুব ইচ্ছা ছিল একজন নারীকে আমি প্রধান বিচারপতি করে যাবো। কিন্তু আমাদের সমাজে এত বেশি কনজারভেটিভ, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সেজন্য করতে পারিনি। এ আফসোসটা থেকে গেল। তিনি বলেন, জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এটাই ছিল পাকিস্তানের আইন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সমস্ত আইনগুলো পরিবর্তন করেন। এই আইন পরিবর্তনের পর থেকে আমাদের দেশের মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দিতে পারছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি সরকারের এসে দেখি আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী জজ নেই। তখন আমি উদ্যোগ নিলাম, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বলেছি উচ্চ আদালতে কোনো জজ নিয়োগ দেওয়া হলে তাতে যদি কোনো নারী জজের নাম না থাকে, আমি কখনো ওই ফাইল সই করব না, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব না। সেই থেকে যাত্রা শুরু।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে নারীদের অনেক বাধা ছিল। সেসময় নারীদের কর্মক্ষেত্রে কোনো সুযোগ দিতো না। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু মুজিব নারীদের সে সুযোগ দিয়েছেন। আইনেই ছিল জুডিসিয়ারিতে মেয়েরা যোগ দিতে পারবে না। জাতির পিতা আইন পরিবর্তন করেন। পরে আমি এসে এটির পথ আরও সুগম করে দেই। নাজমুন আরা আপিল বিভাগেও যান। আমার একটা আফসোস রয়ে গেছে, আমার ইচ্ছে ছিল, প্রধান বিচারপতিও নারীকে করবো। পারিনি। তিনি বলেন, আমি চাই নারী স্বাবলম্বী হোক। নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়। সব জায়গায় তার কথার মূল্যায়ন হয়। আমরা বলতে পারি, এরই মধ্যে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছি।

নিজের মায়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবার বেশির ভাগ সময় জেলে ছিলেন। সংসার চালানো, দল সুসংগঠিত করাসহ সব কাজই আমার মা করেছেন। মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ঢাকা টু আগরতলা লংমার্চের ঘোষণা বিএনপির ৩ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন

মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে: প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০২:১৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩

তপন তালুকদার: আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৯ ডিসেম্বর শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে। তারা যেমন ট্রেনিংয়ে গেছে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রেও সহযোগিতা করেছে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নানা নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া নিজের স্বামীর নামে স্কুল করেছেন। সেখানে ছাত্রী পাওয়া যেত না। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করতেন। সেখানেও নানা বাধার সম্মুখীন হন। তিনি তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, যাহা পুরুষ পারিবে, তাহা নারীও পারিবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা আফসোস রয়ে গেছে আমার, খুব ইচ্ছা ছিল একজন নারীকে আমি প্রধান বিচারপতি করে যাবো। কিন্তু আমাদের সমাজে এত বেশি কনজারভেটিভ, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সেজন্য করতে পারিনি। এ আফসোসটা থেকে গেল। তিনি বলেন, জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এটাই ছিল পাকিস্তানের আইন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সমস্ত আইনগুলো পরিবর্তন করেন। এই আইন পরিবর্তনের পর থেকে আমাদের দেশের মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দিতে পারছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি সরকারের এসে দেখি আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী জজ নেই। তখন আমি উদ্যোগ নিলাম, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বলেছি উচ্চ আদালতে কোনো জজ নিয়োগ দেওয়া হলে তাতে যদি কোনো নারী জজের নাম না থাকে, আমি কখনো ওই ফাইল সই করব না, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব না। সেই থেকে যাত্রা শুরু।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে নারীদের অনেক বাধা ছিল। সেসময় নারীদের কর্মক্ষেত্রে কোনো সুযোগ দিতো না। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু মুজিব নারীদের সে সুযোগ দিয়েছেন। আইনেই ছিল জুডিসিয়ারিতে মেয়েরা যোগ দিতে পারবে না। জাতির পিতা আইন পরিবর্তন করেন। পরে আমি এসে এটির পথ আরও সুগম করে দেই। নাজমুন আরা আপিল বিভাগেও যান। আমার একটা আফসোস রয়ে গেছে, আমার ইচ্ছে ছিল, প্রধান বিচারপতিও নারীকে করবো। পারিনি। তিনি বলেন, আমি চাই নারী স্বাবলম্বী হোক। নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়। সব জায়গায় তার কথার মূল্যায়ন হয়। আমরা বলতে পারি, এরই মধ্যে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছি।

নিজের মায়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবার বেশির ভাগ সময় জেলে ছিলেন। সংসার চালানো, দল সুসংগঠিত করাসহ সব কাজই আমার মা করেছেন। মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।