Dhaka ০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম ১০ আসনে ২ স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে টেনশনে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু!

কুমার শুভ্র, চট্টগ্রাম থেকে: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট যুদ্ধে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের অনেকে নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এবারও চট্টগ্রাম–১০ ডবলমুরিং–খুলশী আসনে ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপনির্বাচনে জয়ী হওয়া চট্টগ্রাম যুবলীগের সাবেক আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। কিন্তু  মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী মাঠে অবতীর্ণ হয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও নগর আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদ । জানা গেছে, এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে টেনশনে আছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের দলীয় প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও নগর আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদের যতেষ্ট প্রভাব রয়েছে চট্টগ্রামের ১০ আসনের ভোটারদের মাঝে। সুত্র জানায়, এই ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে বিএনপির ভোটারাও ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসার সম্ভাবনা পুরোপুরি।  ফলে এই ১০ আসনে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আশা করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

মনোনয়নপ্রাপ্তদের ঘিরে চট্টগ্রামের ১০ আসনে যেমন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। একই সাথে দলের মধ্যে তাদের বিরোধী শিবিরের নেতাকর্মীরাও মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই হবে!

জানা গেছে, মনজুর আলম ১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অংশ নিতে গত ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মূলত এলাকার মানুষের চাপের কারণে তিনি নির্বাচনে আসছেন বলে জানা গেছে। সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, তার বাবা যুগ যুগ ধরে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। তিনি ১৭ বছর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন, ৩ বছর ভারপ্রাপ্ত মেয়র ছিলেন এবং ২০১০-১৫ সাল পর্যন্ত চসিকের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন।

উল্লেখ্য এম মনজুর আলম ২০১০ সালের মেয়র নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চট্টগ্রামের শক্তিশালী দলীয় প্রার্থী চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধূরীকে পরাজিত করে ২০১০-১৫ সাল পর্যন্ত চসিকের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন।

এছাড়াও চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদ গত ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। তিনি কয়েক মাস আগে এই আসনের উপ-নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তাই এবার ফরিদ মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

এদিকে সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর চাপে আছেন। একই দলের নেতা হয়ে এই দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও আওয়ামী লীগের ভোটাররা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এতে দলের মনোনীত প্রার্থী বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কা করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমুলের নেতা কর্মীরা।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, বিদ্রোহ করে কোনো লাভ নেই। শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করে দলীয় প্রতীক দিয়েছেন। আমি জয়ী হয়ে আমার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার মর্যাদা রাখব। এদিকে নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর

আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদ দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, প্রতিটি মানুষের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার রয়েছে। আমার নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাও রয়েছে দলীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। তাই নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচিত হয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমার সঙ্গে ভোটার ও তৃণমূলের আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ভালো কিছু করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।

Tag :

রাষ্ট্রপতির বাসভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা

চট্টগ্রাম ১০ আসনে ২ স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে টেনশনে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু!

Update Time : ০২:৩৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

কুমার শুভ্র, চট্টগ্রাম থেকে: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট যুদ্ধে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের অনেকে নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এবারও চট্টগ্রাম–১০ ডবলমুরিং–খুলশী আসনে ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপনির্বাচনে জয়ী হওয়া চট্টগ্রাম যুবলীগের সাবেক আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। কিন্তু  মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী মাঠে অবতীর্ণ হয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও নগর আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদ । জানা গেছে, এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে টেনশনে আছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের দলীয় প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও নগর আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদের যতেষ্ট প্রভাব রয়েছে চট্টগ্রামের ১০ আসনের ভোটারদের মাঝে। সুত্র জানায়, এই ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে বিএনপির ভোটারাও ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসার সম্ভাবনা পুরোপুরি।  ফলে এই ১০ আসনে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আশা করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

মনোনয়নপ্রাপ্তদের ঘিরে চট্টগ্রামের ১০ আসনে যেমন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। একই সাথে দলের মধ্যে তাদের বিরোধী শিবিরের নেতাকর্মীরাও মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই হবে!

জানা গেছে, মনজুর আলম ১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অংশ নিতে গত ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মূলত এলাকার মানুষের চাপের কারণে তিনি নির্বাচনে আসছেন বলে জানা গেছে। সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, তার বাবা যুগ যুগ ধরে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। তিনি ১৭ বছর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন, ৩ বছর ভারপ্রাপ্ত মেয়র ছিলেন এবং ২০১০-১৫ সাল পর্যন্ত চসিকের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন।

উল্লেখ্য এম মনজুর আলম ২০১০ সালের মেয়র নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চট্টগ্রামের শক্তিশালী দলীয় প্রার্থী চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধূরীকে পরাজিত করে ২০১০-১৫ সাল পর্যন্ত চসিকের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন।

এছাড়াও চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদ গত ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। তিনি কয়েক মাস আগে এই আসনের উপ-নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তাই এবার ফরিদ মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

এদিকে সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর চাপে আছেন। একই দলের নেতা হয়ে এই দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও আওয়ামী লীগের ভোটাররা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এতে দলের মনোনীত প্রার্থী বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কা করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমুলের নেতা কর্মীরা।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, বিদ্রোহ করে কোনো লাভ নেই। শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করে দলীয় প্রতীক দিয়েছেন। আমি জয়ী হয়ে আমার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার মর্যাদা রাখব। এদিকে নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর

আওয়ামীলীগনেতা ফরিদ মাহমুদ দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, প্রতিটি মানুষের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার রয়েছে। আমার নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাও রয়েছে দলীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। তাই নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচিত হয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমার সঙ্গে ভোটার ও তৃণমূলের আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ভালো কিছু করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।