চকোরিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সালাহ উদ্দীন আহমদকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।
গতকাল ২৬ নভেম্বর রোববার সন্ধ্যায় চকরিয়ার চিরিঙ্গায় দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মতবিনিময় সভা করে এমপি জাফর আলমের সমর্থকরা। ওই সমাবেশস্থলে বক্তব্যে এমপি জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সালাহ উদ্দীন আহমদকে প্রকাশ্যে হুমকি ও গালিগালাজ করেন। এর আগে বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে কক্সবাজার-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমকে মনোনয়ন না দিয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দীন আহমদ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
জাফর আলম মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল ও মতবিনিময় সমাবেশ করেন। সেখানে মাইকে বক্তব্য দিতে গিয়ে এমপি জাফরের ছেলে তুহিন সালাহ উদ্দীন আহমদকে গালিগালাজ ও হুমকির একটি ভিডিও রেকর্ডে বলতে দেখা যায়, এই সালাহ উদ্দীন, এই ব্যাটা, আমার বাপরে নিয়া অনেক কথা বলছস। আমরা ভদ্রতা দেখাইছি অনেক। আজ থেকে কোনো ভদ্রতা নেই। এখানে কেউ যদি আঙ্গুল তুলে, সেই আঙ্গুল আমরা ভেঙে দেবো।
বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার বাবা এই চকরিয়ায় আওয়ামী লীগের জন্য অনেক কিছু করেছে। আওয়ামী লীগের উন্নতি করেছে। কিন্তু সালাহ উদ্দীনের কোনো অবদান নেই। এই শা……রা এখানে শুধু ব্যবসা করেছে। একটা ইউনিভার্সিটি করেছে সেই ইউনিভার্সিটি বিক্রি করে খেয়েছে। এখানে গ্যাস স্টেশন করতেছে।
একজন দলীয় প্রার্থীকে এভাবে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে তুহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্ষোভের কারণে বক্তব্যে বলে ফেলা অকথ্য ভাষাটি আসলে অপ্রত্যাশিত ভাবে হয়েছে। তবে আমি সালাহ উদ্দীনকে উদ্দেশ্য করে এমন কথা বলিনি। যারা আমার বাবার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছে। রাতদিন একজন সংসদ সদস্যকে তুই-তুকারি ও গালিগালাজ করে যাচ্ছে ওই ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেছি। তিনি আরও বলেন, ‘যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি জনবিচ্ছিন্ন লোক। একজন ব্যবসায়ী। এর আগেও তাকে তিনবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একবারও নৌকাকে জয়ী করতে পারেননি। এবারও নৌকাকে ডুবানোর আশঙ্কা রয়েছে। তার সঙ্গে যারা আঁতাত করে আমার বাবার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নিয়মিত অকথ্য ভাষায় কথা বলছে তাদের উদ্দেশ্য করে ক্ষোভ থেকে আমি এমন বক্তব্য দিয়েছি। তবে সামনের কোনো জনসভা বা সমাবেশে এসব কঠোর কথা বলবো না। আরো শালীনতা বজায় রেখে কথা বলবো।
সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, সালাহ উদ্দীন তিন তিনবার বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছে। তার বাবা ছিল চকরিয়া উপজেলা শান্তি কমিটির সভাপতি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব তথ্য গোপন করে সে মনোনয়ন নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার কৃতজ্ঞতার কারণ হলো আমাকে মনোনয়ন না দিলেও স্বতন্ত্রভাবে ভোট করার অধিকার দিয়েছেন। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি সালাহ উদ্দীনের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, আমাকে হুমকি বা গালিগালাজ করা তুহিনের বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমি বিষয়টি সংগঠনকে জানাবো।