০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাতকানিয়ার চরতি ইউপি চেয়ারম্যান এমপি নদভীর শ্যালক রুহুল্লাহ চৌধুরীকে বরখাস্ত

  • আপডেট: ০১:৩৩:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩
  • 99

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সাতকানিয়ায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্টের আদেশ এবং সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলার দায়ে উপজেলার চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমপি নদভীর শ্যালক মো. রুহুল্লাহ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া চেয়ারম্যানকে আগামী ১০দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা-তুজ-জোহরা।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নের দক্ষিণ ব্রাহ্মনডেঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শঙ্খ নদী ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় উত্তোলিত বালু অবৈধভাবে বিক্রি করার সময় সৈকত দাশ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেন। একই সঙ্গে ওই স্থান থেকে ৫০ লাখ ঘনফুট বালু ও একটি এক্সক্যাভেটর জব্দ করা হয়। এ সময় সৈকত কে ১লাখ টাকা জরিমানা ও সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। পরে জব্দকৃত মালামাল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর জিম্মায় দেওয়া হয়। অথচ জব্দের পর গত ১৮ই এপ্রিল কর্তৃপক্ষের পরিদর্শনে ৫০ লাখ ঘনফুট বালুর পরিবর্তে বালু পাওয়া যায় ২৫ লাখ ঘনফুট এবং এক্সক্যাভেটরটিও চুরি হয়ে যায়। অভিযোগ উঠে জিম্মাদার ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর অবহেলায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেন। বালু নিলাম কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি বালু ও এক্সক্যাভেটর চুরির জন্য ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে দায়ী করেছে। পরে তদন্ত কমিটি ওই প্রতিবেদন ইউএনও ফাতেমা-তুজ-জোহরার কাছে দাখিল করেন। দায়িত্বে অবহেলা ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির জন্য জব্দকৃত মালামালের জিম্মাদার ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ইউএনও প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নিকট পাঠান।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, জব্দকৃত বালু ও এক্সক্যাভেটর নিলামে বিক্রির উদ্দেশ্যে ৩ দফা জব্দকৃত বালুর স্থান পরিদর্শন করে বালু নিলাম কমিটির আহ্বায়ক আরাফাত সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি। পরিদর্শনে কমিটি ২২ মার্চ প্রায় ৪০লাখ, ১৩ এপ্রিল প্রায় ৩০লাখ এবং ১৮ এপ্রিল প্রায় ২৫লাখ ঘনফুট বালু পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন। তবে, মোবাইল কোর্টের জিম্মানামায় প্রায় ৫০ লাখ ঘনফুট বালু ও একটি এক্সক্যাভেটর মেশিনের কথা উল্লেখ রয়েছে। চুরি হওয়া বালু এক টাকা হারে ২৫লাখ ঘনফুট বালুর আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ টাকা এবং এক্সক্যাভেটর এর মূল্য ১০লাখ টাকা হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ৩৫লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা যায়, কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে বালু ও এক্সক্যাভেটর চুরির প্রাথমিক সত্যতা পায়। জিম্মাদার চুরির বিষয়টি মোবাইল কোর্ট বা নিলাম কমিটিকে যথাসময়ে অবহিত করেননি। এটা মোবাইল কোর্টের আইনানুগ আদেশ প্রতিপালন না করা এবং তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলার শামিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
চরতি ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, এ বিষয়ে মেইলে অফিসিয়ালি একটি চিঠি আমি পেয়েছি।

সর্বাধিক পঠিত

সাতকানিয়ার চরতি ইউপি চেয়ারম্যান এমপি নদভীর শ্যালক রুহুল্লাহ চৌধুরীকে বরখাস্ত

আপডেট: ০১:৩৩:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সাতকানিয়ায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্টের আদেশ এবং সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলার দায়ে উপজেলার চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমপি নদভীর শ্যালক মো. রুহুল্লাহ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া চেয়ারম্যানকে আগামী ১০দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা-তুজ-জোহরা।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নের দক্ষিণ ব্রাহ্মনডেঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শঙ্খ নদী ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় উত্তোলিত বালু অবৈধভাবে বিক্রি করার সময় সৈকত দাশ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেন। একই সঙ্গে ওই স্থান থেকে ৫০ লাখ ঘনফুট বালু ও একটি এক্সক্যাভেটর জব্দ করা হয়। এ সময় সৈকত কে ১লাখ টাকা জরিমানা ও সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। পরে জব্দকৃত মালামাল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর জিম্মায় দেওয়া হয়। অথচ জব্দের পর গত ১৮ই এপ্রিল কর্তৃপক্ষের পরিদর্শনে ৫০ লাখ ঘনফুট বালুর পরিবর্তে বালু পাওয়া যায় ২৫ লাখ ঘনফুট এবং এক্সক্যাভেটরটিও চুরি হয়ে যায়। অভিযোগ উঠে জিম্মাদার ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর অবহেলায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেন। বালু নিলাম কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি বালু ও এক্সক্যাভেটর চুরির জন্য ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে দায়ী করেছে। পরে তদন্ত কমিটি ওই প্রতিবেদন ইউএনও ফাতেমা-তুজ-জোহরার কাছে দাখিল করেন। দায়িত্বে অবহেলা ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির জন্য জব্দকৃত মালামালের জিম্মাদার ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ইউএনও প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নিকট পাঠান।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, জব্দকৃত বালু ও এক্সক্যাভেটর নিলামে বিক্রির উদ্দেশ্যে ৩ দফা জব্দকৃত বালুর স্থান পরিদর্শন করে বালু নিলাম কমিটির আহ্বায়ক আরাফাত সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি। পরিদর্শনে কমিটি ২২ মার্চ প্রায় ৪০লাখ, ১৩ এপ্রিল প্রায় ৩০লাখ এবং ১৮ এপ্রিল প্রায় ২৫লাখ ঘনফুট বালু পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন। তবে, মোবাইল কোর্টের জিম্মানামায় প্রায় ৫০ লাখ ঘনফুট বালু ও একটি এক্সক্যাভেটর মেশিনের কথা উল্লেখ রয়েছে। চুরি হওয়া বালু এক টাকা হারে ২৫লাখ ঘনফুট বালুর আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ টাকা এবং এক্সক্যাভেটর এর মূল্য ১০লাখ টাকা হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ৩৫লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা যায়, কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে বালু ও এক্সক্যাভেটর চুরির প্রাথমিক সত্যতা পায়। জিম্মাদার চুরির বিষয়টি মোবাইল কোর্ট বা নিলাম কমিটিকে যথাসময়ে অবহিত করেননি। এটা মোবাইল কোর্টের আইনানুগ আদেশ প্রতিপালন না করা এবং তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলার শামিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
চরতি ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, এ বিষয়ে মেইলে অফিসিয়ালি একটি চিঠি আমি পেয়েছি।