মোঃ বাবুল শেখ : মানিকগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যানের নামে আশুলিয়ায় ধর্ষন ও পর্নোগ্রাফি মামলা হয়েছে। জানা গেছে, আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় বসবাসরত এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৬ মে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি অভিযোগে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ শফিকুল ইসলাম শফিকের নামে মামলাটি রুজু করা হয়।
গত ১৮ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোমেনুল ইসলাম দৈনিক সূর্যোদয়কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামী শেখ মোঃ শফিকুল ইসলাম শফিক (৪৩) মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। তিনি মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক এবং দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত আট বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সাথে পরিচয় হয় ধর্ষণের শিকার ভূক্তভোগী ওই নারীর। আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরির সুবাদে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ভাড়া থাকতেন ওই নারী। দীর্ঘদিনের পরিচয়ের জেরে একপর্যায়ে ওই নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন শফিকুল ইসলাম। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আত্মীয় স্বজনদের কাছে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে কৌশলে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। দীর্ঘ আট বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে ওই নারীর ভাড়া বাসায় গিয়ে বার বার শারীরিক সম্পর্ক করলেও বিয়ে না করে তালবাহানা করতে থাকে। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে ওই নারীর ভাড়া বাসায় গিয়ে ফের শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর ওই নারী বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করিলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় শফিকুল ইসলাম।
অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম ওই নারীর সাথে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলার সময় গোপনে তার মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখে। এরপর থেকেই উক্ত ভিডিও ও গোপন ছবি ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানহানির হুমকি প্রদান করে। একপর্যায়ে উক্ত ভিডিও ও গোপন ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ছড়িয়ে দিয়ে। ভুক্তভোগী ওই নারী জানায়, শফিকুল ইসলাম বিয়ের আশ্বাসে কৌশলে আমাকে ধর্ষণ করে ও মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরবর্তীতে সে আমার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে আমার সম্মানহানি করেছে।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শফিকের মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই নারীর সাথে তার প্রথম স্বামীর ঝামেলা চলাকালীন সময়ে তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। এরপর থেকে সে আমার সাথে বিভিন্ন রকমের ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করে। দীর্ঘ আট বছর আগের কথা, তখন বয়স কম ছিল। মেয়েটা দেখতে শুনতে ভালো ছিল, আমিও পুরুষ মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই ওর সাথে একটা সম্পর্ক হয়েছিল। ওর সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেও গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারলাম সে একাধিক মানুষের সাথে সম্পর্কে জড়িত। কিন্ত তার কোন গোপন ছবি বা ভিডিও আমি ছড়িয়ে দেইনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোমেনুল ইসলাম বলেন, একজন নারী শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছে। আসামীকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।