Dhaka ০৭:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চট্টগ্রামের শতাধিক ও চাঁদপুরে ৪০ গ্রামে ঈদ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩
  • 2062

সূর্যেোদয় প্রতিবেদন : সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চট্টগ্রাম শতাধিক গ্রামে এবং চাঁদপুরের প্রায় ৪০টি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। ঈদকে ঘিরে এসব গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল রাতে সৌদি আরবে চাঁদ দেখা যাওয়ায় ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়। আজ শুক্রবার ২১ এপ্রিল সকাল ৯টায় সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুরের সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন দরবারের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী। ঈদ উদযাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, পৃথিবীর যেকোন স্থানে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমরা ঈদ উদযাপন করি।
এরপর সকাল ১০টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সাদ্রা ঈদগাহ ময়দানে। এখানে ইমামতি করেন পীর মো. আরিফ চৌধুরী।
সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রায় ৯৪ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুটি ঈদ উদযাপন করছেন।
জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয়দের অসহযোগিতার মুখে তা ভেস্তে যায়। সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে একদিন আগে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়ায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। ওই বছরই নিজ গ্রাম সাদ্রায় ফিরে আসেন তিনি। চালু করেন সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন প্রথা। পরে তিনি দরবার শরিফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
সাদ্রা ছাড়াও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হলো- হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
এ ছাড়া চাঁদপুরের পাশের নোয়াখালী, ল²ীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থান। এদিকে চট্টগ্রামের শতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়েছে আজ ২১ এপ্রিল শুক্রবার। সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফী মাযহাবের অনুসরণে ঈদ পালন করে থাকে। দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফি মাজহাব মতে বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে প্রায় দুইশত বছর পূর্ব হতে এভাবে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা এবং চন্দ্র মাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল অনুশাসনসমুহ পালন করে আসছেন।
দরবারের সূত্র জানায়, মির্জাখীল দরবার শরীফের খানকাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। হজরত শাহ জাহাঁগীর শেখুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর ফখরুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর শমসুল আরেফীন (কঃ) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সাজ্জাদানশীন হজরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন (কঃ) এর তত্ত¡াবধানে উনারই জানশীন হজরত ইমামুল আরেফীন ড. মৌলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান সাহেব ঈদের নামাজে ইমামতি করেন।
মির্জাখীল দরবার শরীফ সূত্র মতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, এওচিয়ার গাটিয়াডেঙ্গা, আলীনগর, মাদার্শা, খাগরিয়া, মৈশামুড়া, পুরানগড়, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, চরতি, সুঁইপুরা, হালুয়াঘোনা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, চরবরমা, কেশুয়া, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, ডোংরা, শেখেরখীল, ছনুয়া, পুইছড়ি, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, খাসকামা, কাঠাখালী, রায়পুর, গুজরা, লোহাগাড়ার পুঁটিবিলা, কলাউজান, চুনতী এবং সীতাকুন্ডের মাহমুদাবাদ, বারিয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, সলিমপুর, মহালংকা, ফেনী, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ঢাকা, মুহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মনোহরদী, মঠখোলা, বেলাব, আব্দুল্লাহনগর, কাপাসিয়া, চাঁদপুর জেলার মতলব, সিলেট, হবিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা, মিরশরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, হাতিয়া, স›দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রাম। এছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যাংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার অনেক গ্রামে থাকা মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরাও শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ময়মনসিংহে নিজ বাসার সামনে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চট্টগ্রামের শতাধিক ও চাঁদপুরে ৪০ গ্রামে ঈদ

Update Time : ০৭:০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩

সূর্যেোদয় প্রতিবেদন : সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চট্টগ্রাম শতাধিক গ্রামে এবং চাঁদপুরের প্রায় ৪০টি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। ঈদকে ঘিরে এসব গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল রাতে সৌদি আরবে চাঁদ দেখা যাওয়ায় ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়। আজ শুক্রবার ২১ এপ্রিল সকাল ৯টায় সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুরের সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন দরবারের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী। ঈদ উদযাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, পৃথিবীর যেকোন স্থানে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমরা ঈদ উদযাপন করি।
এরপর সকাল ১০টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সাদ্রা ঈদগাহ ময়দানে। এখানে ইমামতি করেন পীর মো. আরিফ চৌধুরী।
সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রায় ৯৪ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুটি ঈদ উদযাপন করছেন।
জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয়দের অসহযোগিতার মুখে তা ভেস্তে যায়। সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে একদিন আগে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়ায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। ওই বছরই নিজ গ্রাম সাদ্রায় ফিরে আসেন তিনি। চালু করেন সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন প্রথা। পরে তিনি দরবার শরিফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
সাদ্রা ছাড়াও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হলো- হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
এ ছাড়া চাঁদপুরের পাশের নোয়াখালী, ল²ীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থান। এদিকে চট্টগ্রামের শতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়েছে আজ ২১ এপ্রিল শুক্রবার। সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফী মাযহাবের অনুসরণে ঈদ পালন করে থাকে। দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফি মাজহাব মতে বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে প্রায় দুইশত বছর পূর্ব হতে এভাবে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা এবং চন্দ্র মাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল অনুশাসনসমুহ পালন করে আসছেন।
দরবারের সূত্র জানায়, মির্জাখীল দরবার শরীফের খানকাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। হজরত শাহ জাহাঁগীর শেখুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর ফখরুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর শমসুল আরেফীন (কঃ) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সাজ্জাদানশীন হজরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন (কঃ) এর তত্ত¡াবধানে উনারই জানশীন হজরত ইমামুল আরেফীন ড. মৌলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান সাহেব ঈদের নামাজে ইমামতি করেন।
মির্জাখীল দরবার শরীফ সূত্র মতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, এওচিয়ার গাটিয়াডেঙ্গা, আলীনগর, মাদার্শা, খাগরিয়া, মৈশামুড়া, পুরানগড়, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, চরতি, সুঁইপুরা, হালুয়াঘোনা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, চরবরমা, কেশুয়া, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, ডোংরা, শেখেরখীল, ছনুয়া, পুইছড়ি, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, খাসকামা, কাঠাখালী, রায়পুর, গুজরা, লোহাগাড়ার পুঁটিবিলা, কলাউজান, চুনতী এবং সীতাকুন্ডের মাহমুদাবাদ, বারিয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, সলিমপুর, মহালংকা, ফেনী, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ঢাকা, মুহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মনোহরদী, মঠখোলা, বেলাব, আব্দুল্লাহনগর, কাপাসিয়া, চাঁদপুর জেলার মতলব, সিলেট, হবিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা, মিরশরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, হাতিয়া, স›দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রাম। এছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যাংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার অনেক গ্রামে থাকা মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরাও শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।