Dhaka ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালত প্রাঙ্গণে শামসুদ্দিন মানিককে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:২১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
  • 103

সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট সীমান্ত এলাকায় আটক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আদালতে নিয়ে আসা হয় পুলিশ পাহারায়। পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে তাকে নামানোর পরপরই পুলিশের সামনে কিল-ঘুষি মারার ঘটনা ঘটে। এ সময় তাকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয় জুতা, ডিম ও পানির বোতল। ২৪ আগস্ট শনিবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। বিকাল সাড়ে ৪টায় শুনানি শেষে শামসুদ্দিন মানিককে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসেন কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতে শুনানিকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না বলে পুলিশ জানায়। এদিকে, সাবেক বিচারপতি মানিককে আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে শনিবার দুপুর থেকে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জমশেদ আলম। তিনি বলেন, এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় কানাইঘাট থানা পুলিশ। ঢাকার বাড্ডা, আদাবর থানাসহ একাধিক থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা থাকায় তাকে থানা পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে আসামি সিলেটে আছেন বলে বার্তা পাঠাবো। পরে সংশ্লিষ্ট থানা তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখাবে। তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি হিসেবে জেল কোড অনুযায়ী আসামিকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি আদালতকে জানিয়েছেন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলকোড অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ২৩ আগস্ট শুক্রবার রাতে অবৈধভাবে সিলেটের কানাইঘাট (দনা) সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বিজিবি। শনিবার ভোরে তাকে কানাইঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে মানিককে বলতে শোনা গেছে, টাকা লাগলে তিনি দেবেন। তার ভাইবোন দেবেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি এ দেশে (ভারত) এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য? আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক বিচারপতির গলায় গামছা বেঁধে ধরে রেখেছেন একজন ব্যক্তি। আরেকজন তার নাম জিজ্ঞেস করছেন। এ সময় বিচারপতি মানিক তার পুরো নাম বলেন এবং বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে শামসুদ্দিন মানিক অনেকটা অসহায় হয়ে বলতে থাকেন, আমার কাছে ছিল ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড। ভয়ে দেশ ছেড়ে যাচ্ছিলাম। এখানকার দুই যুবক বলেছিল, ১৫ হাজার টাকা দিলে সীমান্ত পার করে দেবে। ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর সেই দুই যুবক ভারত সীমান্তে আমাকে নিয়ে যায়। সীমান্তে নিয়ে মারধর করে আমার কাছে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে যায় তারা। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে মাটিতে কলার পাতার ওপর শুইয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।

Tag :

রাষ্ট্রপতির বাসভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা

আদালত প্রাঙ্গণে শামসুদ্দিন মানিককে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ

Update Time : ০৯:২১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট সীমান্ত এলাকায় আটক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আদালতে নিয়ে আসা হয় পুলিশ পাহারায়। পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে তাকে নামানোর পরপরই পুলিশের সামনে কিল-ঘুষি মারার ঘটনা ঘটে। এ সময় তাকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয় জুতা, ডিম ও পানির বোতল। ২৪ আগস্ট শনিবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। বিকাল সাড়ে ৪টায় শুনানি শেষে শামসুদ্দিন মানিককে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসেন কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতে শুনানিকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না বলে পুলিশ জানায়। এদিকে, সাবেক বিচারপতি মানিককে আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে শনিবার দুপুর থেকে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জমশেদ আলম। তিনি বলেন, এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় কানাইঘাট থানা পুলিশ। ঢাকার বাড্ডা, আদাবর থানাসহ একাধিক থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা থাকায় তাকে থানা পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে আসামি সিলেটে আছেন বলে বার্তা পাঠাবো। পরে সংশ্লিষ্ট থানা তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখাবে। তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি হিসেবে জেল কোড অনুযায়ী আসামিকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি আদালতকে জানিয়েছেন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলকোড অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ২৩ আগস্ট শুক্রবার রাতে অবৈধভাবে সিলেটের কানাইঘাট (দনা) সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বিজিবি। শনিবার ভোরে তাকে কানাইঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে মানিককে বলতে শোনা গেছে, টাকা লাগলে তিনি দেবেন। তার ভাইবোন দেবেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি এ দেশে (ভারত) এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য? আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক বিচারপতির গলায় গামছা বেঁধে ধরে রেখেছেন একজন ব্যক্তি। আরেকজন তার নাম জিজ্ঞেস করছেন। এ সময় বিচারপতি মানিক তার পুরো নাম বলেন এবং বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে শামসুদ্দিন মানিক অনেকটা অসহায় হয়ে বলতে থাকেন, আমার কাছে ছিল ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড। ভয়ে দেশ ছেড়ে যাচ্ছিলাম। এখানকার দুই যুবক বলেছিল, ১৫ হাজার টাকা দিলে সীমান্ত পার করে দেবে। ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর সেই দুই যুবক ভারত সীমান্তে আমাকে নিয়ে যায়। সীমান্তে নিয়ে মারধর করে আমার কাছে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে যায় তারা। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে মাটিতে কলার পাতার ওপর শুইয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।