খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিপুল ভোটে তৃতীয়বারের মতো মেয়র হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। সর্বমোট ২৮৯ কেন্দ্রের মধ্যে সবকটির ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত ফলে তালুকদার আব্দুল খালেক নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুল আউয়াল হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট। তবে তিনি নির্বাচনের ফল বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ১২ জুন সোমবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত নির্বাচনি ফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বেসরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। এর আগে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টায়। বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা শুরু হয়।
এ নিয়ে তৃতীয়বার মেয়র হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত এই প্রার্থী। এর আগে ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৩ সালে সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির কাছে তিনি হেরেছিলেন। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও বাগেরহাট-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৮ সালে খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে দ্বিতীয়বার মেয়র হন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৫২ সালের ১ জুন বাগেরহাটের মল্লিকেরবেড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তালুকদার আব্দুল খালেক। স্কুলজীবন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক জীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে খুলনায়। ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৭৭ সালে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ওই বছরই ২১ বছর বয়সে খুলনা পৌরসভার মহসিনাবাদ ইউনিয়নের কমিশনার হন। এরপর মহসিনবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের খুলনা জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে খুলনা পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে রূপ নেয়। সেবার তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ পুরুষ, ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী। নির্বাচনে সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। মোট ২৮৯টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পাঁচ জন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে ১৮ হাজার ৭৪, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীকে ছয় হাজার ৯৬ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান টেবিলঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ২১৮ ভোট।