Dhaka ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের উত্তর ফটিকছড়ির দাঁতমারায় মাদকের বিপদজনক বিস্তার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:২৮:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩
  • 3531

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি : পুলিশের পরোক্ষ সহযোগিতায় উত্তর ফটিকছড়ির ভূজপুর থানার অন্তর্গত ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নে অধিকাংশ এলাকায় মরন নেশা ইয়াবা নামক মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। এখানে মাদক ব্যবসার সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। ধারণা করা যাচ্ছে, এর সংখ্যা অনেক। প্রতিটি গ্রামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরোক্ষ সহযোগিতায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মাদক বেচাকেনার হাট বসে। জানাগেছে দাঁতমারায় মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে ইসলামপুরের রাবার চোর আবুল কাসেমের ছেলে সবুজ মিয়াসহ ৬ জন গডফাদার। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। আর এ মাদক খুচরা আকারে বিক্রিতে জড়িত শতাধিক কারবারি। সুত্র জানায় ভূজপুর থানার ওসিসহ ৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সহায়তা করছে। এছাড়া ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন গডফাদারের তালিকায়। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বাংলাদেশে মাদকের বাজার তৈরি করে নিয়েছে। এ জন্যই দেশ মাদকে সয়লাব। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না। মাদকের কারণে সমাজে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরুণদের ভবিষ্যৎ। খুন থেকে শুরু করে নানারকম অপরাধপ্রবণতা তৈরি হচ্ছে সমাজে। এর চেয়ে সামাজিক অবক্ষয় আর কী হতে পারে? বিশেষ করে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার দাঁতমারা ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরোক্ষ সহযোগিতায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। এদিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম জেলায় কে কীভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম জেলার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসৎ সদস্য সহায়তা করছে। তাদের সহায়তা পেয়ে রাজনৈতিক নেতা নামধারী মাদক ব্যবসায়িরা ফেনসিডিল, মদ, বিয়ার, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের ব্যবসা করে অল্প সময়ের মধ্যে বিত্ত-বৈভবের মালিক হচ্ছে। এতে বলা হয়, গডফাদার, মাদক ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তার কারণে নতুন নতুন মাদকসেবী তৈরি হচ্ছে। অবৈধ মাদকসেবীরা তাদের অর্থের যোগান দিতে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম ও খুনসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম জেলার ৭৪ জন মাদক ব্যবসায়ির বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে মাদক কারবারিদের সহায়তাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সাব ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিচয় প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সহসাই এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে।

Tag :

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়েছে সরকার

চট্টগ্রামের উত্তর ফটিকছড়ির দাঁতমারায় মাদকের বিপদজনক বিস্তার

Update Time : ০৭:২৮:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি : পুলিশের পরোক্ষ সহযোগিতায় উত্তর ফটিকছড়ির ভূজপুর থানার অন্তর্গত ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নে অধিকাংশ এলাকায় মরন নেশা ইয়াবা নামক মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। এখানে মাদক ব্যবসার সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। ধারণা করা যাচ্ছে, এর সংখ্যা অনেক। প্রতিটি গ্রামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরোক্ষ সহযোগিতায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মাদক বেচাকেনার হাট বসে। জানাগেছে দাঁতমারায় মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে ইসলামপুরের রাবার চোর আবুল কাসেমের ছেলে সবুজ মিয়াসহ ৬ জন গডফাদার। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। আর এ মাদক খুচরা আকারে বিক্রিতে জড়িত শতাধিক কারবারি। সুত্র জানায় ভূজপুর থানার ওসিসহ ৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সহায়তা করছে। এছাড়া ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন গডফাদারের তালিকায়। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বাংলাদেশে মাদকের বাজার তৈরি করে নিয়েছে। এ জন্যই দেশ মাদকে সয়লাব। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না। মাদকের কারণে সমাজে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরুণদের ভবিষ্যৎ। খুন থেকে শুরু করে নানারকম অপরাধপ্রবণতা তৈরি হচ্ছে সমাজে। এর চেয়ে সামাজিক অবক্ষয় আর কী হতে পারে? বিশেষ করে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার দাঁতমারা ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরোক্ষ সহযোগিতায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। এদিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম জেলায় কে কীভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম জেলার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসৎ সদস্য সহায়তা করছে। তাদের সহায়তা পেয়ে রাজনৈতিক নেতা নামধারী মাদক ব্যবসায়িরা ফেনসিডিল, মদ, বিয়ার, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের ব্যবসা করে অল্প সময়ের মধ্যে বিত্ত-বৈভবের মালিক হচ্ছে। এতে বলা হয়, গডফাদার, মাদক ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তার কারণে নতুন নতুন মাদকসেবী তৈরি হচ্ছে। অবৈধ মাদকসেবীরা তাদের অর্থের যোগান দিতে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম ও খুনসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম জেলার ৭৪ জন মাদক ব্যবসায়ির বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে মাদক কারবারিদের সহায়তাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সাব ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিচয় প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সহসাই এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে।