০৮:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্দ্বীপবাসীর আলোর ফেরিওয়ালা আবুল কাসেম হায়দার

  • আপডেট: ০৩:১৭:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • 18

সুব্রত শুভ্র : একটি সমাজকে সভ্য ও প্রগতিশীল করার মূল শর্ত হলো শিক্ষা। শিক্ষার বিকাশ ছাড়া কোনো জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু শিক্ষা বিকশিত হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে, আর সংস্কৃতি বিকাশের জন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি। এই তিন ক্ষেত্র—শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি—এই ত্রিমাত্রিক শক্তিকে নিজের মেধা, শ্রম ও চিন্তাশক্তি দিয়ে সমুন্নত করেছেন যে মানুষটি, তিনি হলেন ড. আবুল কাসেম হায়দার—সন্দ্বীপের গর্ব, আলোর ফেরিওয়ালা। ড. আবুল কাসেম হায়দার কেবল সন্দ্বীপ নয়, বাংলাদেশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। শিক্ষা, ব্যবসা, সাহিত্য ও সমাজসেবার প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর দৃষ্টান্ত আজ তরুণ প্রজন্মের প্রেরণা। তাঁর কর্ম ও চিন্তা প্রমাণ করে—একজন মানুষ চাইলে কেবল নিজের নয়, পুরো জাতির আলোকিত ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারেন। ১৯৫৪ সালের ১লা এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলার দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপের উত্তর মগধরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ও দানবীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ড. আবুল কাসেম হায়দার। পিতা মৌলভী সেকান্দর হোসেন ছিলেন এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী, আর মাতা মরহুমা সাফিয়া খাতুন ছিলেন একজন স্নেহশীল ও শিক্ষানুরাগী নারী।

আবুল কাসেম হায়দার

জানাগেছে, শিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগ থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, এবং নিজ এলাকায় আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ ও সেকান্দর-সাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় অবদানের কারণে তিনি ছিলেন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিটিএমএ’র সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইয়ুথ গ্রুপ আজ দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, যার অধীনে রয়েছে ইয়ুথ স্পিনিং মিলস, ইয়ুথ প্রপার্টিজ, ইয়ুথ এগ্রো, ইয়ুথ রিয়েল এস্টেটসহ বহু প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবা ও মানবকল্যাণে সন্দ্বীপের শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশন ও ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ৩টি কলেজ, ২৮টি স্কুল ও ৬টি মাদ্রাসা। চালু করেছেন আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও সন্দ্বীপের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়। তিনি বারডেম হাসপাতালে “ইয়ুথ ফাউন্ডেশন লিভার এন্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিট”-এর প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা, যা বাংলাদেশের প্রথম এই ধরনের চিকিৎসা কেন্দ্র। লেখক হিসেবে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিয়মিতভাবে জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে অর্থনীতি, শিল্প, সমাজ ও শিক্ষাবিষয়ক প্রবন্ধ লিখে আসছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৪০টিরও বেশি। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অসংখ্য পদক ও পুরস্কার। যার মধ্যে রয়েছে—সিআইপি পদক (১৯৯৮), বিজয় পদক, দেশনেত্রী পদক, কবি ফররুখ পদক, সৈয়দ আলী আহসান সিএনসি পদক (২০২১) ইত্যাদি। ব্যক্তিজীবনে ড. আবুল কাসেম হায়দার এক পুত্র নাহিদ ও দুই কন্যা সন্তানের পিতা। তাঁর স্ত্রী আফরোজা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

সর্বাধিক পঠিত

সন্দ্বীপবাসীর আলোর ফেরিওয়ালা আবুল কাসেম হায়দার

আপডেট: ০৩:১৭:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

সুব্রত শুভ্র : একটি সমাজকে সভ্য ও প্রগতিশীল করার মূল শর্ত হলো শিক্ষা। শিক্ষার বিকাশ ছাড়া কোনো জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু শিক্ষা বিকশিত হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে, আর সংস্কৃতি বিকাশের জন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি। এই তিন ক্ষেত্র—শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি—এই ত্রিমাত্রিক শক্তিকে নিজের মেধা, শ্রম ও চিন্তাশক্তি দিয়ে সমুন্নত করেছেন যে মানুষটি, তিনি হলেন ড. আবুল কাসেম হায়দার—সন্দ্বীপের গর্ব, আলোর ফেরিওয়ালা। ড. আবুল কাসেম হায়দার কেবল সন্দ্বীপ নয়, বাংলাদেশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। শিক্ষা, ব্যবসা, সাহিত্য ও সমাজসেবার প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর দৃষ্টান্ত আজ তরুণ প্রজন্মের প্রেরণা। তাঁর কর্ম ও চিন্তা প্রমাণ করে—একজন মানুষ চাইলে কেবল নিজের নয়, পুরো জাতির আলোকিত ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারেন। ১৯৫৪ সালের ১লা এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলার দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপের উত্তর মগধরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ও দানবীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ড. আবুল কাসেম হায়দার। পিতা মৌলভী সেকান্দর হোসেন ছিলেন এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী, আর মাতা মরহুমা সাফিয়া খাতুন ছিলেন একজন স্নেহশীল ও শিক্ষানুরাগী নারী।

আবুল কাসেম হায়দার

জানাগেছে, শিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগ থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, এবং নিজ এলাকায় আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ ও সেকান্দর-সাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় অবদানের কারণে তিনি ছিলেন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিটিএমএ’র সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইয়ুথ গ্রুপ আজ দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, যার অধীনে রয়েছে ইয়ুথ স্পিনিং মিলস, ইয়ুথ প্রপার্টিজ, ইয়ুথ এগ্রো, ইয়ুথ রিয়েল এস্টেটসহ বহু প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবা ও মানবকল্যাণে সন্দ্বীপের শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশন ও ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ৩টি কলেজ, ২৮টি স্কুল ও ৬টি মাদ্রাসা। চালু করেছেন আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও সন্দ্বীপের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়। তিনি বারডেম হাসপাতালে “ইয়ুথ ফাউন্ডেশন লিভার এন্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিট”-এর প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা, যা বাংলাদেশের প্রথম এই ধরনের চিকিৎসা কেন্দ্র। লেখক হিসেবে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিয়মিতভাবে জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে অর্থনীতি, শিল্প, সমাজ ও শিক্ষাবিষয়ক প্রবন্ধ লিখে আসছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৪০টিরও বেশি। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অসংখ্য পদক ও পুরস্কার। যার মধ্যে রয়েছে—সিআইপি পদক (১৯৯৮), বিজয় পদক, দেশনেত্রী পদক, কবি ফররুখ পদক, সৈয়দ আলী আহসান সিএনসি পদক (২০২১) ইত্যাদি। ব্যক্তিজীবনে ড. আবুল কাসেম হায়দার এক পুত্র নাহিদ ও দুই কন্যা সন্তানের পিতা। তাঁর স্ত্রী আফরোজা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।