নূরুল ইসলাম রিপন, চট্টগ্রাম ব্যুরো : ছাত্র জনতার প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন আওয়ামী সরকারের আমলে দৌর্দণ্ড প্রতাপশালী বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আহসানুর রহমান। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোকার প্রতীক পাওয়া চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চুর নির্বাচনী মাঠে ছিলেন সরব। তিনি যুবলীগনেতা সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রভাব কাটিয়ে বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের সর্বোত্রই ছিলেন প্রচণ্ড প্রভাবশালী। আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ যুবলীগনেতা সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রভাব কাটিয়ে শেখ হাসিনার শাসনে দাপটের সঙ্গে বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে খবরদারি করেছেন। মেতে উঠেছিলেন বেপরোয়া স্বেচ্ছাচারিতায়। শেখ হাসিনার পতনের সাথে সাথে এখন ভোল পাল্টেছেন। জানাগেছে, ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের আট মাস পেরোলেও বন গবেষণা ইনস্টিটিউট এখনো আওয়ামীপন্থিদের কব্জায় রয়েছে। জানাগেছে, বিভাগীয় কর্মকর্তা আহসানুর রহমান শুধু বহাল তবিয়তেই নেই। বরং অভিযোগ রয়েছে তিনি সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের দোসর কর্মকর্তাদের পুনর্বাসনে। প্রশ্ন উঠেছে তার ক্ষমতার উৎস নিয়ে। তিনি এমন দাপুটে যে গত ১৭ মার্চ তার নির্দেশে চট্টগ্রামের বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে কাটা হয়েছে ৯৭টি গাছ। এ নিয়ে পরিবেশকর্মীরা আপত্তি তোলার পরও দাপট দেখিয়ে কাটা হয় এই গাছ। জানাগেছে, চট্টগ্রামের বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) আগর গবেষণাগারের ভবন নির্মাণের জন্য গাছগুলো কাটা হয়। যেসব গাছ কাটা হয়েছিলো, এর বেশির ভাগ পরিপক্ব নয়। আগর গবেষণাগার করার জন্য ছয়তলার ভবন নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহরের বিএফআরআইয়ের অভ্যন্তরে ৫৮ শতক জায়গায়। যেখানে ছিলো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ন গাছ। ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর বিএফআরআইয়ের সেসময়ের বিভাগীয় কর্মকর্তা (প্রশাসন) মো. মাহবুবুর রহমান ভবন নির্মাণে গাছ কাটার অনুমোদনের জন্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ গাছ কাটার অনুমোদন দেয়নি। তাদের বলা হয়েছে, গাছ কাটার জন্য মন্ত্রণালয়ের যথাযথ কমিটির অনুমোদন নিয়ে তা জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটিতে প্রেরণ করার জন্য। কিন্তু ওই কমিটি পজিটিভ কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। পরে গাছ কাটার অনুমোদনের জন্য বিএফআরআইয়ের সংশ্লিষ্ঠ পরিচালকের নির্দেশে তাঁদের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সাত সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। বিএফআরআই বন রক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আহসানুর রহমান ওই কমিটির আহ্বায়ক। আহসানুর রহমানের নেতৃত্বে এই কমিটি গত ৬ ফেব্রুয়ারি সভা করে গাছ কাটার অনুমোদন দেয়। এ অনুমোদনের পর অপ্সরী টিম্বার নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিয়োগ করেন। অপ্সরী টিম্বারের নিকট ১৫ লাখ টাকায় গাছগুলো বিক্রি করে মাত্র ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বিএফআরআইয়ের হিসাবে দেখানো হয়। বাকী টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে নেয় পরিচালক থেকে শুরু করে পিডি জাকির হোসেন ও বিএফআরআইয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত সাত সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক বিএফআরআই বন রক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আহসানুর রহমান।
০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:










