Dhaka ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাকা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম তোলার ফোনালাপ ফাঁস

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:০৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 45

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায় মুক্তিযোদ্ধা বানানোর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম ওঠেনি তদবিরের জন্য সালেহা জাহান সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের বেহালা বাদক গৌর চন্দ্র সরকার এর মেয়ে কলেজ শিক্ষার্থী গীতা সরকার কাছ থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা বলেন, নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। ফোনালাপটি ফাঁস করায় ভুক্তভোগী পরিবারকে নানা হুমকি ধামকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। জানা গেছে সালেহা জাহান মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তিনি সিংগাইর উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকও। এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী গীতা সরকার বলেন, বাবা গৌর চন্দ্র সরকার একজন বেহালা বাদক। বাংলাদেশ বেতারে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশ নিলেও তালিকায় নাম ওঠেনি। এ নিয়ে বাবার আক্ষেপ আছে। তাই সন্তান হিসেবে বাবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি তালিকায় নাম তুলতে। কিন্তু সবার মুখেই শুনেছি টাকা ছাড়া কিছুই হবে না। যুব মহিলা লীগ নেত্রী সালেহা জাহান আমার পূর্ব পরিচিত। তাকে বিষয়টি জানালে এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম ওঠাতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এজন্য আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। দুদফায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন সালেহা জানান। বাকি টাকা কাজের পর দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়। ব্যক্তিগত হিসাব নম্বর থেকে সালেহা জানানের ব্যাংক হিসাব নম্বরে আরটিজিএসের মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। নগদ দিয়েছি ২০ হাজার টাকা। ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের রশিদও আছে। কিন্তু দুবছর পেরিয়ে গেলেও সালেহা জাহান বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত করতে পারেননি। এ কারণে তার কাছে টাকা ফেরত চাই। বহুদিন ঘুরানোর পর কিছু টাকা ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু বাকি টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাদের চাপে রেখেছেন তিনি। গীতা সরকারের এক আত্মীয় বেসরকারি একটি টেলিভিশনে ঢাকায় কর্মরত এক সাংবাদিক সম্প্রতি টাকা চেয়ে যুব মহিলা লীগ নেত্রী সালেহা জাহানকে ফোন করেন। এ সময় সালেহা জাহানকে বলতে শোনা যায় টাকা তো ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওই সাংবাদিককে বলতে শোনা যায় আপনি তো ২ লাখ টাকা দিয়েছেন। আরও ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আছে। তখন সালেহা জাহান বলেন, ওটাও ফেরত দেওয়া হবে। পারলে আপনারা করে দেন কাজটা। সাংবাদিকের কথা সূত্র ধরে তাকে আবারো বলতে শোনা যায় ওর সঙ্গে (গীতা সরকার) কথা হয়েছে টাকা ফেরত দেবো তাড়াতাড়ি। এ বঅপারে মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক রোমেজা আক্তার খান মাহিন বলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের টাকা নেওয়ার ঘটনা জেনেছি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সভানেত্রীকে জানানো হয়েছে। সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য একজন নেত্রীর টাকা নেওয়া একটি জঘন্যতম ও নিন্দনীয় কাজ। সালেহা জাহানের এমন কর্মকাণ্ড দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে।

Tag :

রাষ্ট্রপতির বাসভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা

টাকা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম তোলার ফোনালাপ ফাঁস

Update Time : ০১:০৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায় মুক্তিযোদ্ধা বানানোর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম ওঠেনি তদবিরের জন্য সালেহা জাহান সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের বেহালা বাদক গৌর চন্দ্র সরকার এর মেয়ে কলেজ শিক্ষার্থী গীতা সরকার কাছ থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা বলেন, নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। ফোনালাপটি ফাঁস করায় ভুক্তভোগী পরিবারকে নানা হুমকি ধামকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। জানা গেছে সালেহা জাহান মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তিনি সিংগাইর উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকও। এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী গীতা সরকার বলেন, বাবা গৌর চন্দ্র সরকার একজন বেহালা বাদক। বাংলাদেশ বেতারে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশ নিলেও তালিকায় নাম ওঠেনি। এ নিয়ে বাবার আক্ষেপ আছে। তাই সন্তান হিসেবে বাবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি তালিকায় নাম তুলতে। কিন্তু সবার মুখেই শুনেছি টাকা ছাড়া কিছুই হবে না। যুব মহিলা লীগ নেত্রী সালেহা জাহান আমার পূর্ব পরিচিত। তাকে বিষয়টি জানালে এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম ওঠাতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এজন্য আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। দুদফায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন সালেহা জানান। বাকি টাকা কাজের পর দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়। ব্যক্তিগত হিসাব নম্বর থেকে সালেহা জানানের ব্যাংক হিসাব নম্বরে আরটিজিএসের মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। নগদ দিয়েছি ২০ হাজার টাকা। ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের রশিদও আছে। কিন্তু দুবছর পেরিয়ে গেলেও সালেহা জাহান বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত করতে পারেননি। এ কারণে তার কাছে টাকা ফেরত চাই। বহুদিন ঘুরানোর পর কিছু টাকা ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু বাকি টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাদের চাপে রেখেছেন তিনি। গীতা সরকারের এক আত্মীয় বেসরকারি একটি টেলিভিশনে ঢাকায় কর্মরত এক সাংবাদিক সম্প্রতি টাকা চেয়ে যুব মহিলা লীগ নেত্রী সালেহা জাহানকে ফোন করেন। এ সময় সালেহা জাহানকে বলতে শোনা যায় টাকা তো ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওই সাংবাদিককে বলতে শোনা যায় আপনি তো ২ লাখ টাকা দিয়েছেন। আরও ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আছে। তখন সালেহা জাহান বলেন, ওটাও ফেরত দেওয়া হবে। পারলে আপনারা করে দেন কাজটা। সাংবাদিকের কথা সূত্র ধরে তাকে আবারো বলতে শোনা যায় ওর সঙ্গে (গীতা সরকার) কথা হয়েছে টাকা ফেরত দেবো তাড়াতাড়ি। এ বঅপারে মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক রোমেজা আক্তার খান মাহিন বলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের টাকা নেওয়ার ঘটনা জেনেছি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সভানেত্রীকে জানানো হয়েছে। সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য একজন নেত্রীর টাকা নেওয়া একটি জঘন্যতম ও নিন্দনীয় কাজ। সালেহা জাহানের এমন কর্মকাণ্ড দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে।