Dhaka ০১:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, লাখো মানুষ পানিবন্দি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:০৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪
  • 128

হেলাল আহমদ: সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে ফের বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। গতকাল ১৭ জুন সোমবার ঈদুল আযহার দিন সকাল থেকেই পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ও ছাতক পয়েন্টে ১৩৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ ১৮ জুন মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের ফলে শহরে ফের পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে। জেলার ছাতক থেকে গোবিন্দগঞ্জ সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব সড়কের ওপর দিয়ে তীব্র পানির স্রোত যাচ্ছে। এছাড়া, সোমবার থেকেই প্লাবিত জেলার ১০ উপজেলার শতাধিক গ্রাম। ভোগান্তিতে দুই লাখের বেশি মানুষ। ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদী। পাউবোর তথ্য মতে মঙ্গলবার (১৮ জুন) নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছাতক পৌরশহরের বাগবাড়ী, মন্ডলীভোগ, হাসপাতাল রোড, তাঁতিকোন, বৌলা, চরেরবন্দ, মোগলপাড়া, ঢাকাইয়া বাড়ি, লেবারপাড়া, পাটনীাড়া, কুমনা, শ্যামপাড়াসহ আবাসিক এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার বসবাসরত মানুষজন। ইতোমধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রাথমিক সব ব্যবস্থা রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। ছাতকসহ পার্শ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যেই ছাতকের বহু গ্রামীণ সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। ছাতক উপজেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দুর্বিসহ অবস্থায় দিন পার করছে। উপজেলার ইছামতি-ছনবাড়ীবাজার, শিমুলতলা-মুক্তিরগাঁও সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, ছাতক-জাউয়া, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের বিভিন্ন নিচু অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ছাতক পৌরসভারসহ নোয়ারাই, ছাতক সদর, কালারুকা, উত্তর খুরমা, চরমহল্লা, জাউয়া, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছৈলা-আফজলাবাদ, দক্ষিণ খুরমা, ভাতগাঁও, দোলারবাজার ও সিংচাপইড় ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি ও গ্রামীণ কাঁচা সড়ক। পাহাড়ি ঢলের স্রোতের ধাক্কায় ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবতী নীজগাঁও, রতনপুর, বাগানবাড়ি, নোয়াকোট, ধনীটিলা, ছনবাড়ী, দারোগাখালী সড়ক সহ নব নির্মিত ৮-১০টি কাঁচা সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতসহ প্রাথমিক সব ধরনের প্রস্তুতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় সকলকে মানবীয় কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

Tag :

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪ মামলা বাতিল

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, লাখো মানুষ পানিবন্দি

Update Time : ১২:০৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

হেলাল আহমদ: সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে ফের বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। গতকাল ১৭ জুন সোমবার ঈদুল আযহার দিন সকাল থেকেই পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ও ছাতক পয়েন্টে ১৩৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ ১৮ জুন মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের ফলে শহরে ফের পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে। জেলার ছাতক থেকে গোবিন্দগঞ্জ সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব সড়কের ওপর দিয়ে তীব্র পানির স্রোত যাচ্ছে। এছাড়া, সোমবার থেকেই প্লাবিত জেলার ১০ উপজেলার শতাধিক গ্রাম। ভোগান্তিতে দুই লাখের বেশি মানুষ। ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদী। পাউবোর তথ্য মতে মঙ্গলবার (১৮ জুন) নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছাতক পৌরশহরের বাগবাড়ী, মন্ডলীভোগ, হাসপাতাল রোড, তাঁতিকোন, বৌলা, চরেরবন্দ, মোগলপাড়া, ঢাকাইয়া বাড়ি, লেবারপাড়া, পাটনীাড়া, কুমনা, শ্যামপাড়াসহ আবাসিক এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার বসবাসরত মানুষজন। ইতোমধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রাথমিক সব ব্যবস্থা রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। ছাতকসহ পার্শ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যেই ছাতকের বহু গ্রামীণ সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। ছাতক উপজেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দুর্বিসহ অবস্থায় দিন পার করছে। উপজেলার ইছামতি-ছনবাড়ীবাজার, শিমুলতলা-মুক্তিরগাঁও সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, ছাতক-জাউয়া, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের বিভিন্ন নিচু অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ছাতক পৌরসভারসহ নোয়ারাই, ছাতক সদর, কালারুকা, উত্তর খুরমা, চরমহল্লা, জাউয়া, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছৈলা-আফজলাবাদ, দক্ষিণ খুরমা, ভাতগাঁও, দোলারবাজার ও সিংচাপইড় ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি ও গ্রামীণ কাঁচা সড়ক। পাহাড়ি ঢলের স্রোতের ধাক্কায় ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবতী নীজগাঁও, রতনপুর, বাগানবাড়ি, নোয়াকোট, ধনীটিলা, ছনবাড়ী, দারোগাখালী সড়ক সহ নব নির্মিত ৮-১০টি কাঁচা সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতসহ প্রাথমিক সব ধরনের প্রস্তুতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় সকলকে মানবীয় কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।