সুব্রত শুভ্র : চট্টগ্রামের রাজনীতিতে এখন অনেক বড় জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী। আসলাম চৌধুরী ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের পর থেকে দীর্ঘদিন কারাগারে রয়েছেন তিনি। নিজ এলাকা সীতাকুণ্ডের জনসাধারণের কল্যাণে রাজনীতিতে আসেন আসলাম চৌধুরী। তিনি একজন একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চাকরি জীবনের শুরুতে বিসিএস কর্মকর্তাও ছিলেন। ব্যবসায়িক জীবনেও সফল ছিলেন তিনি। এই কারণে আসলাম চৌধুরী দেশের রাজনীতিতে অনেক বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ান। ফলে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি।
জানাগেছে, রাজনীতির শুরুতে চট্টগ্রামে বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও তিনি বিএনপি নেত্রীর কাছে ছিলেন গ্রহণযোগ্য মেধাবী রাজনীতিবিদ। এছাড়াও দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারণে ভিতরে ভিতরে জনপ্রিয় নেতাও হয়ে উঠেন এই রাজনীতিবিদ। সীতাকুন্ডের বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, ২০১২ সাল থেকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন আসলাম চৌধুরী। এরপর ২০১৬ সালে সম্পূর্ণ বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় তাকে, যার কোনো বিন্দু পরিমাণ সত্যতা নেই। তার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ২০০২ সালে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন আসলাম চৌধুরী।
তখন বিএনপির এই অঙ্গসংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এরপর মেধা ও জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে দুই বছরের মধ্যে উঠে আসেন জেলার সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে। পাশাপাশি জায়গা করে নেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। ৫ বছর পর ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল জেলা বিএনপির সভাপতিও নির্বাচিত হন তিনি। তার দুই বছর পর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার আস্থা অর্জন করে দলের যুগ্ম মহাসচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে চলে আসেন তিনি। বিএনপির রাজনীতির শীর্ষ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন শুধু তার মেধার কারণে।
এদিকে আসলাম চৌধুরী ২০১৬ সালে গ্রেপ্তারের পর থেকে দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দী থেকে দিন দিন তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রামের অনেক বিএনপি নেতাও হতবাক। বর্তমানে বিএনপির এ নেতার বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতে জড়িত থাকার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রয়েছে। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন আসলাম চৌধুরী। ১৯৯৬ সালে কলেজের শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে এফসিএ পাস করেন। চাকরি নেন চট্টগ্রামের কবির স্টিল মিল নামের একটি বড় কোম্পানিতে। পরে এখান থেকে কনফিডেন্স সিমেন্ট কোম্পানির অর্থব্যবস্থাপক পদে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে এই সিমেন্ট কোম্পানিতে সিএফও (হিসাব বিভাগের প্রধান) পদে কর্মরত ছিলেন। পরে চাকরি ছেড়ে কনফিডেন্স সল্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে শুরু করেন ব্যবসা। এর মধ্য দিয়ে রাইজিং গ্রুপ নামে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। তার গড়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বোয়ালখালীতে কনফিডেন্স লবণ কারখানা, সীতাকুন্ডসহ বেশ কয়টি স্থানে সিএনজি ফিলিং স্টেশন, চকরিয়ার হারবাংয়ে অবস্থিত ইনানি রিসোর্ট, চট্টগ্রাম নগরীর নাসিরাবাদ ও সাগরিকা সড়কে ফিশ প্রিজার্ভার্স নামে দুটি মৎস্য সংরক্ষণ কারখানা। ব্যক্তি জীবনে এক কন্যা সন্তানের পিতা তিনি।










