Dhaka ০৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের পটিয়ায় যৌতুক চাওয়া সেই ব্যাংক কর্মকর্তা লাপাত্তা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৪০:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • 61

পটিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়ায় যৌতুকের চাপের কারণে আত্মহত্যা করা তরুণীর হবু স্বামী মিজানুর রহমান মোরশেদের হদিস মিলছে না। তিনি তার কর্মস্থল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জের মোগড়াপাড়া শাখায় উপস্থিত হননি। পটিয়া উপজেলায় হাইদগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মোরশেদের বাড়িতেও ঝুলছে তালা। আজ ৩০ জুন রোববার দুপুরে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জের মোগড়াপাড়া শাখায় খোজ নিয়ে জানাগেছে, মিজানুর রহমান এই ব্রাঞ্চের অফিসার। তার হবু স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে সে ব্যাংকের কারোর সাথে যোগাযোগ করেননি এবং কোন কর্মকর্তার ফোনও তিনি রিসিভ করেননি। আজ রোববার ব্যাংকেও তিনি আসেননি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ আছে। এর আগে গত ২৭ জুন পটিয়ার হাইদগাঁও এলাকায় রীমা আক্তার নামে এক তরুণী বিয়ের আগের দিন আত্মহত্যা করেন। হবু স্বামী মিজানুর রহমানের যৌতুক দাবির চাপ সইতে না পেরে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আত্মহত্যার আগে চিরকুটে তিনি উল্লেখ করে যান। এ ঘটনাটি এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযুক্ত মোরশেদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি ওঠেছে। ভুক্তভোগী রীমার বাবা মঞ্জুর হোসেন বাদী হয়ে পটিয়া থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মিজানুর রহমানকে একমাত্র আসামি করা হয়।
মামলার বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, মামলাটি রেকর্ড হওয়ার পর থেকে আমরা তদন্ত করে দেখছি। আসামি পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী তরুণী রীমার সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা ও ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মোরশেদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। ভুক্তভোগী রীমার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের আগে বরযাত্রীদের আপ্যায়নের কথা বলে মোরশেদের পরিবারের লোকজন তাদের কাছ থেকে মোট ২ লাখ টাকা নেয়। এরপরও মোরশেদ রীমার কাছে ফোন দিয়ে ফার্নিচারসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া করে। চাপ সইতে না পেরে রীমা গলায় ফাঁস দেয়। এদিন তিনি চিরকুটে লিখেন, প্রিয় শখের পুরুষ। তুমি করো তোমার বিয়ে। অনেক ভালোবেসেছো এবং অতিরিক্ত যন্ত্রণাও দিয়েছো। আমি পারছি না এতো যন্ত্রণা নিতে। বাকি জীবনটা সুন্দর করে উপভোগ করতে পারলাম না। ভালো থেকো, আজকের দিনেও তোমার যন্ত্রণা নিতে পারছি না। আমার পরিবার থেকে যে যৌতুকের টাকা তোমাদের দিয়েছে সেগুলো শোধ করে দিও। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না। আমি বাঁচতে পারতাম, যদি আমি বেশি মানসম্মানওয়ালা পরিবারের জন্মগ্রহণ না করতাম। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর আমার পোস্টমর্টেম করিয়ে আমার সবযন্ত্রণা ধুয়ে মিছে আমাকে কবরে পাঠিও। আর আমার পরিবারকে বলছি মোরশেদকে তোমরা ছাড়বা না। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি তোমরা দিবা।

 

Tag :

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়েছে সরকার

চট্টগ্রামের পটিয়ায় যৌতুক চাওয়া সেই ব্যাংক কর্মকর্তা লাপাত্তা

Update Time : ০২:৪০:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

পটিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়ায় যৌতুকের চাপের কারণে আত্মহত্যা করা তরুণীর হবু স্বামী মিজানুর রহমান মোরশেদের হদিস মিলছে না। তিনি তার কর্মস্থল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জের মোগড়াপাড়া শাখায় উপস্থিত হননি। পটিয়া উপজেলায় হাইদগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মোরশেদের বাড়িতেও ঝুলছে তালা। আজ ৩০ জুন রোববার দুপুরে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জের মোগড়াপাড়া শাখায় খোজ নিয়ে জানাগেছে, মিজানুর রহমান এই ব্রাঞ্চের অফিসার। তার হবু স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে সে ব্যাংকের কারোর সাথে যোগাযোগ করেননি এবং কোন কর্মকর্তার ফোনও তিনি রিসিভ করেননি। আজ রোববার ব্যাংকেও তিনি আসেননি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ আছে। এর আগে গত ২৭ জুন পটিয়ার হাইদগাঁও এলাকায় রীমা আক্তার নামে এক তরুণী বিয়ের আগের দিন আত্মহত্যা করেন। হবু স্বামী মিজানুর রহমানের যৌতুক দাবির চাপ সইতে না পেরে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আত্মহত্যার আগে চিরকুটে তিনি উল্লেখ করে যান। এ ঘটনাটি এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযুক্ত মোরশেদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি ওঠেছে। ভুক্তভোগী রীমার বাবা মঞ্জুর হোসেন বাদী হয়ে পটিয়া থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মিজানুর রহমানকে একমাত্র আসামি করা হয়।
মামলার বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, মামলাটি রেকর্ড হওয়ার পর থেকে আমরা তদন্ত করে দেখছি। আসামি পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী তরুণী রীমার সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা ও ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মোরশেদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। ভুক্তভোগী রীমার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের আগে বরযাত্রীদের আপ্যায়নের কথা বলে মোরশেদের পরিবারের লোকজন তাদের কাছ থেকে মোট ২ লাখ টাকা নেয়। এরপরও মোরশেদ রীমার কাছে ফোন দিয়ে ফার্নিচারসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া করে। চাপ সইতে না পেরে রীমা গলায় ফাঁস দেয়। এদিন তিনি চিরকুটে লিখেন, প্রিয় শখের পুরুষ। তুমি করো তোমার বিয়ে। অনেক ভালোবেসেছো এবং অতিরিক্ত যন্ত্রণাও দিয়েছো। আমি পারছি না এতো যন্ত্রণা নিতে। বাকি জীবনটা সুন্দর করে উপভোগ করতে পারলাম না। ভালো থেকো, আজকের দিনেও তোমার যন্ত্রণা নিতে পারছি না। আমার পরিবার থেকে যে যৌতুকের টাকা তোমাদের দিয়েছে সেগুলো শোধ করে দিও। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না। আমি বাঁচতে পারতাম, যদি আমি বেশি মানসম্মানওয়ালা পরিবারের জন্মগ্রহণ না করতাম। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর আমার পোস্টমর্টেম করিয়ে আমার সবযন্ত্রণা ধুয়ে মিছে আমাকে কবরে পাঠিও। আর আমার পরিবারকে বলছি মোরশেদকে তোমরা ছাড়বা না। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি তোমরা দিবা।