Dhaka ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেঘনার মানিকারচরের ৪টি স্পটে মাদক কারবারে জনপ্রতিনিধি

  • আপডেট: ০৪:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
  • 103

জামাল হাকিম : মানিকারচর ইউনিয়নের ৪টি স্পটে মাদক কারবারে জনপ্রতিনিধি স্থানীয় প্রশাসন একাকার হয়ে গেছে। কুমিল্লা মেঘনা থানার অন্তর্গত মানিকারচর ইউনিয়নটি ১৯৯৭ সালে ২০ টি গ্রাম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, মেঘনা থানা সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে মানিকারচর ইউনিয়নটি হোমনা থানাধিন বৃহত্তর রাধানগর ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল। বর্তমানে মানিকারচর ইউনিয়ন মেঘনা থানার অন্তর্গত। এই মানিকারচর ইউনিয়ন পরিষদের এক শ্রেণীর জনপ্রতিনিধি মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত। স্থানীয় প্রশাসনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তারাও মাদকের টাকার ভাগ পান নিয়মিত। এই ইউনিয়নে পুলিশের একজন এসআইকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। স্থানীয় পুলিশ জানে ও তাদের কাছে তালিকা রয়েছে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে কারা জড়িত। সরেজমিনে দেখা গেছে, মানিকারচর ইউনিয়নের ৪টি স্পটে অবাধে মাদক কেনাবেচা চলছে। ৪টি স্পট হলো মুক্তি নগর বাজার, বারহাজারী গ্রাম, চেঙ্গাকান্দি ও রাথানগর।

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তদের আনাগোনায় এসব জায়গা সরব হয়ে ওঠে। রাতভর চলে কেনাবেচা। প্রতিদিন হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ভারত থেকে সড়কপথে তারারগঞ্জ ব্রিজের উপর দিয়ে এসে ঢুকছে মানিকারচর ইউনিয়নে। এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে অপরাধজগতের দুইজন প্রভাবশালী গডফাদার। এই দুইজনের এক গডফাদার ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকার ভাড়া বাসায় বসে মানিকারচর ইউনিয়ন থেকে মাদক ঢাকায় নিয়ে গিয়ে সরবরাহ করেন।

জানা গেছে, তিনি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন ঢাকায় বসে। এই গডফাদার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার যোগসাজশে নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক ব্যবসা। সরেজমিনে দেখা গেছে, মুক্তি নগর বাজার এলাকায় মাদক বেঁচাকেনা হয় সবচেয়ে বেশি। মাদকের টাকায় এই এলাকায় অনেকেই বিলাশ বহুল গাড়ি ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। যারা একদিন ছিলেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। মানিকারচর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ বলেছেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের জীবন ধ্বংস করে তারা আজ এতো টাকার মালিক। ওয়ার্ড থেকে উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী থাকার পরও এই ব্যবস্থা কিভাবে চলে? কারণ তাদের ছত্রছায়া না হলে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা হতে পারে না।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, তাদের একার পক্ষে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। তাদের জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট পর্যাপ্ত নেই। তাই মাদক নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা অরক্ষিত। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে যাতে মাদক না আসতে পারে সেজন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাদক দ্রব্যের পক্ষ থেকে সর্বনাশা মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণসহ সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন করে তুলতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

সর্বাধিক পঠিত

লেবার পার্টির নেতা টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ

মেঘনার মানিকারচরের ৪টি স্পটে মাদক কারবারে জনপ্রতিনিধি

আপডেট: ০৪:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩

জামাল হাকিম : মানিকারচর ইউনিয়নের ৪টি স্পটে মাদক কারবারে জনপ্রতিনিধি স্থানীয় প্রশাসন একাকার হয়ে গেছে। কুমিল্লা মেঘনা থানার অন্তর্গত মানিকারচর ইউনিয়নটি ১৯৯৭ সালে ২০ টি গ্রাম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, মেঘনা থানা সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে মানিকারচর ইউনিয়নটি হোমনা থানাধিন বৃহত্তর রাধানগর ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল। বর্তমানে মানিকারচর ইউনিয়ন মেঘনা থানার অন্তর্গত। এই মানিকারচর ইউনিয়ন পরিষদের এক শ্রেণীর জনপ্রতিনিধি মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত। স্থানীয় প্রশাসনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তারাও মাদকের টাকার ভাগ পান নিয়মিত। এই ইউনিয়নে পুলিশের একজন এসআইকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। স্থানীয় পুলিশ জানে ও তাদের কাছে তালিকা রয়েছে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে কারা জড়িত। সরেজমিনে দেখা গেছে, মানিকারচর ইউনিয়নের ৪টি স্পটে অবাধে মাদক কেনাবেচা চলছে। ৪টি স্পট হলো মুক্তি নগর বাজার, বারহাজারী গ্রাম, চেঙ্গাকান্দি ও রাথানগর।

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তদের আনাগোনায় এসব জায়গা সরব হয়ে ওঠে। রাতভর চলে কেনাবেচা। প্রতিদিন হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ভারত থেকে সড়কপথে তারারগঞ্জ ব্রিজের উপর দিয়ে এসে ঢুকছে মানিকারচর ইউনিয়নে। এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে অপরাধজগতের দুইজন প্রভাবশালী গডফাদার। এই দুইজনের এক গডফাদার ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকার ভাড়া বাসায় বসে মানিকারচর ইউনিয়ন থেকে মাদক ঢাকায় নিয়ে গিয়ে সরবরাহ করেন।

জানা গেছে, তিনি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন ঢাকায় বসে। এই গডফাদার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার যোগসাজশে নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক ব্যবসা। সরেজমিনে দেখা গেছে, মুক্তি নগর বাজার এলাকায় মাদক বেঁচাকেনা হয় সবচেয়ে বেশি। মাদকের টাকায় এই এলাকায় অনেকেই বিলাশ বহুল গাড়ি ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। যারা একদিন ছিলেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। মানিকারচর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ বলেছেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের জীবন ধ্বংস করে তারা আজ এতো টাকার মালিক। ওয়ার্ড থেকে উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী থাকার পরও এই ব্যবস্থা কিভাবে চলে? কারণ তাদের ছত্রছায়া না হলে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা হতে পারে না।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, তাদের একার পক্ষে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। তাদের জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট পর্যাপ্ত নেই। তাই মাদক নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা অরক্ষিত। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে যাতে মাদক না আসতে পারে সেজন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাদক দ্রব্যের পক্ষ থেকে সর্বনাশা মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণসহ সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন করে তুলতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।